পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে রাজ্যগুলির চাহিদা মতোই ট্রেন দিয়েছে রেল। কিন্তু, দেখা যাচ্ছে যাত্রীর অভাবে ২৫০টি ট্রেন বাতিল হয়েছে। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন অভিযোগই করেছেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। তালিকায় মহারাষ্ট্রের নাম শীর্ষে রয়েছে। চাহিদা সত্ত্বেও সেই রাজ্যে শতাধিক ট্রেন বাতিল হয়েছে বলে জানান রেলমন্ত্রী। তবে, পরিযায়ীদের ঘরে ফেরাতে রাজ্য চাইলে ট্রেনের যোগান অব্যাহত থাকবে বলে স্পষ্ট করেছেন গোয়েল।
রেলমন্ত্রী আরও বলেছেন, "রেল প্রস্তুত থাকলেও মহারাষ্ট্রে ১৪৫টি ট্রেন বাতিল হয়েছে। পরিযায়ীদের ফেরাতে এগুলি অন্য কোথাও ব্যবহার করা যেত। বান্দ্রায় ২০ হাজার মানুষকে নিয়ে আসা হবে বলে জানায় রাজ্য সরকার। রেল তাতেই সম্মতি দেয়। সেখান থেকেই দেশের নানা প্রান্তে ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু, তালিকা অনুসারে একজন যাত্রীও সেখানে ছিলেন না। বিহার, উত্তরপ্রদেশ এ জন্য খুবই অসন্তুষ্ট।"
শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন নির্ধারিত সময়ের তুলনায় অনেকটাই দেরিতে গন্তব্যে পৌঁছচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী বলেন, "প্রথমদিকে নির্ধারিত সময়ে বা তার আগেই গন্তব্যে পৌঁছচ্ছিল সব শ্রমিক স্পেশাল। কিন্তু, এরপরই ট্রেনের রুট বেড়ে যায়। চাহিদা অনুসারে অনেক ট্রেন প্রত্যেকদিন চলতে শুরু করে। ফলে কিছু সমস্যা হয়েছিল। তবে তা এমন কিছু নয়।" তথ্যের বিশ্লেষণে রবিবার দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানতে পেরেছে যে, প্রায় ৪০ শতাংশ শ্রমিক স্পেশালই দেরিতে চলেছে। গড়ে প্রায় ৮ ঘন্টা দেরিতে চলছে ট্রেনগুলো।
বেশ কয়েকটি রাজ্য পরিযায়ীদের ফেরৎ নিতে অস্বীকার করেছে। বিশেষ করে পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি। এ নিয়ে তাঁর কাছে বহু ফোন এসেছে বলে দাবি রেলমন্ত্রী গোয়েলের। তাঁর কথায়, "স্টেশনে এসেও নিজেদের রাজ্য না চাওয়ায় পরিয়ায়ীরা ঘরে ফিরতে পরেননি। তবে রাজ্যগুলো যখন আগ্রাহ দেখায় নি, তখন কেন্দ্রকেই আটকে থাকা পরিয়ায়ীদের ফেরাতে উদ্যোগ নিতে হয়েছে।" যখন স্পষ্ট হলো যে, লকডাউনে বিভিন্ন রাজ্যে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকরা ঘরে ফিরতে মরিয়া, তখনই কেন্দ্র শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালানোর ছাড়পত্র দেয়, বলেন গোয়েল।
"দেখা গিয়েছে, বেশিরভাগ ট্রেনই বিহার, উত্তরপ্রদেশ সহ পূর্ব ভারতের দিকে যাচ্ছে। রেল সবকিছু খুবই ভালোভাবে সামলেছে। গন্তব্য রাজ্যগুলি একাধিক স্টপেজ আছে এমন স্টেশনের দাবি জানিয়েছিল। সেই মতোই কাজ করা হয়েছে। আমি প্রতিদিন তিনবার করে নজরদারি করেছি।"
গোয়েল আরও জানিয়েছেন, শ্রমিক স্পেশালে রেল ১.১৯ কোটি জনের খাবার দিয়েছে, রাজ্যগুলি দিয়েছে ৫৪ লক্ষ। এর আগে শ্রমিক স্পেশালের ভাড়াকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। রেলমন্ত্রী বলেন, "১৫ শতাংশেরও কম খরচ উঠছে। যদি বলা হতো বিনামূল্যে ট্রেন চালানো হবে, তবে ভাবুন কি হতো। সবাই ওই ট্রেনেই উঠতে পড়তেন। কেউ সেই পরিস্থিতি সামলাতে পারত?"
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন