টেনেটুনে আর মাত্র এক মাসের অপেক্ষা। তারপরই এ দেশে আত্মপ্রকাশ ঘটতে চলেছে তাঁর। শুধু এ দেশই নয়, গোটা দুনিয়ার সবথেকে উঁচু মূর্তির উদ্বোধন হতে চলেছে আগামী মাসের ৩১ তারিখ। হাতে তো সময় একেবারে নেই। তাই শেষ মুহূর্তে চলছে চূড়ান্ত প্রস্তুতি। সর্দার বল্লভভাই পটেলের সেই লৌহ মূর্তি ঘিরে সরগরম গোটা দেশ। নির্মাণ প্রকল্পের কাছে গেলে আপনার চক্ষু ছানাবড়া হওয়ার জোগাড়। কারণটা একটাই, ওই বিশাল মূর্তি। এখনও পর্যন্ত মূর্তি বসেনি। মানে, এখনও সর্দার বল্লভভাই পটেলের মূর্তি গড়া বাকি। তবে বাকি অংশের কাজ প্রায় শেষের মুখে। মুখ ও কাঁধ বাদে এই মুহূর্তে ওই লৌহ মূর্তির উচ্চতা ঠেকেছে ১২০-১৩০ মিটার। মোট ১৮২ মিটার উচ্চতার ওই মূর্তি গড়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
মার্কিন মুলুকে রয়েছে স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, আর এবার এ দেশের মাটিতে তিলে তিলে গড়ে উঠছে ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’। সর্দার বল্লভভাই পটেলের এই বিশালাকার মূর্তিকে ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’ হিসেবেই নামাঙ্কিত করা হয়েছে। তবে স্ট্যাচু অফ লিবার্টির উচ্চতা দেশি আয়রন ম্যানের মূর্তির থেকে ঢের খাটো। সব ঠিক থাকলে, আগামী ৩১ অক্টোবর সর্দার বল্লভভাই পটেলের এই লৌহ মূর্তির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ছবি: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
এদিকে, বছর পেরোলেই লোকসভা ভোট। উনিশের ভোটযুদ্ধের আগে সর্দার বল্লভভাই পটেলের এই লৌহ মূর্তি মোদি বাহিনীর প্রচারে বাড়তি অক্সিজেন জোগাবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। দেশের এই লৌহ মূর্তি অখণ্ডতা ও একতার প্রতীক বলে বর্ণনা করেছে মোদি সরকার। নরেন্দ্র মোদি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ২০১৩ সালে এই মূর্তি গড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেসময়ই ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’ গড়ার কথা ঘোষণা করেন নরেন্দ্র মোদি। সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোহা, মাটি, জল সংগ্রহ করে এই মূর্তি গড়া হয়েছে। আর মূর্তি গড়ার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোহা, জল, মাটি সংগ্রহ করেছে বিজেপি।
আরও পড়ুন, ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’-র উদ্বোধন ৩১ অক্টোবর
সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের এই মূর্তি তৈরির বরাত পায় এল অ্যান্ড টি লিমিটেড। ওই কোম্পানিই বিশ্বের সবচেয়ে উঁচি মূর্তির নকশা তৈরি করে তা বানাচ্ছে। বিশ্বের সবথেকে দীর্ঘ মূর্তি গড়তে খরচ হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। প্রায় ৪ হাজার ৭৬ জন শ্রমিক দু শিফটে কাজ করছেন এজন্য। যার মধ্যে হাজার খানেক শ্রমিক শুধু মূর্তির কাজেই রয়েছেন। লৌহ মূর্তি নির্মাণে হাত লাগিয়েছেন চিনা কর্মীরাও। প্রায় ২০০ চিনা কর্মী এ কাজে রয়েছেন। শুধু মূর্তিই নয়, ফুডকোর্ট, ওয়াকওয়ে, টিকিট কাউন্টার গড়ার কাজও চলছে।
অন্যদিকে, লৌহমূর্তির উদ্বোধনের দিন যত এগোচ্ছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হচ্ছে। নির্মাণ প্রকল্পের নজরদারির জন্য ইতিমধ্যেই, তিনি নিরাপত্তা কর্মী, ২ জন হোমগার্ড ও তিন জন স্টেট রিজার্ভ পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।