শেয়ার বাজার সোমবার ঝুপ করে পড়েছে অনেকটা। শুরুতেই পড়ে ২.৭২ শতাংশ। বাজার বন্ধও হয় বড় পতনকে সঙ্গী করে। সেনসেক্স পড়েছে ১,৪০০ পয়েন্ট, নিফটি ১৫,৯০০ পয়েন্ট। রিয়েলটি ও ব্যাঙ্কের শেয়ারে পতন হয়েছে ৪ থেকে ৫ শতাংশ।
কিন্তু কেন শেয়ার বাজারে এই পতন?
এর কারণটা মূলত তেলের দাম। তেলের দাম ৮.৫০ শতাংশ বেড়ে যায় সোমবার সকালে। এটা যেন বাজারে প্যানিক বোতাম টিপে দেয়। শেয়ার বাজার লাফিয়ে লাফিয়ে পড়তে থাকে। কিন্তু কেন তেলের দাম বাড়ল? কে না জানে রাশিয়া বিরাট তেল উৎপাদককারী দেশ। সেখানেই পৃথিবীর দ্বিতীয় তেল ভাণ্ডার। রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করে আমেরিকা, ভাল মাত্রায়। কিন্তু রাশিয়ার ইউক্রেন হামলায় সে দেশে এই আমদানি বন্ধের জন্য চাপ তৈরি হয়েছে। রবিরার মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিনকেন জানান, তাঁর দেশ এবং ইউরোপীয় সঙ্গীরা রুশ তেল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে। মার্কিন হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকার ন্যনসি পেলোসি আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে বলেন, তাঁরা রুশ তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি নিয়ে আইন তৈরির ব্য়াপারে আলোচনা চালাচ্ছেন। এখন, এই সব মহা মহা মুনিদের বিস্ফোরক সব কথায় রুশ তেলের উপর মার্কিন আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কথাবার্তার হিল্লোল উঠে যায়। যদি এমন কিছু হয়, তা হলে তো দাম আরও বাড়বে তেলের, এই আশঙ্কা ঘনীভূত হয়ে ওঠে, যার চাপ গিয়ে পড়ে ওই প্যানিক বোতামে।
দাম পড়ছে টাকারও, কিন্তু কেন?
সোমবারের শুরুতে টাকার দাম রেকর্ড হ্রাস পেয়ে যায়। এর কারণও তেলের ভিতর লুকিয়ে রয়েছে। তেলের দাম চোঁ-চোঁ বাড়ায় অন্যান্য জিনিসপত্রের দামও শোঁ-শোঁ করে বাড়বে, তাই তো স্বাভাবিক! মানে মুদ্রাস্ফীতির বজ্রমেঘ সহ বৃষ্টির আতঙ্ক, সেটাই টাকার দামকে হ্যাঁচকা টান মেরে নামিয়ে দিয়েছে। এক ডলারে টাকা সোমবারের শুরুতে ৭৭.১-এ পৌঁছে যায় এর ফলে। তার পর একটু বেড়ে পৌঁছয় ৭৬.১৬-তে। পরে আরেকটু বাড়ে, পৌঁছয় ৭৬.৮১-তে।
আরও পড়ুন- ২০ বছর অটো চালিয়েছেন, এবার কুম্ভকনম চালাবেন মেয়র সরভানাম
বিনিয়োগকারীরা কী করবেন?
বিনিয়োগকারীদের একটা বড় অংশ মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েছেন। মাথার ঘায়ে কুকুর পাগল অবস্থা তাঁদের। বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প ছাড়া আর কোথাও বিনিয়োগ করবেন না দয়া করে। দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ বলতে মিউচুয়াল ফান্ড, সেখানে এসআইপি বন্ধ করার কোনও দরকার নেই।
তবে এমন চলতে থাকলে আগামীতে শেয়ার বাজার থেকে কোন দানব বেরিয়ে আসবে, সেই ভয়টা ঘুম কেড়েছে অনেকের।
Read story in English