মঙ্গলবার রাতে কেঁপে উঠল উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ভূমিকম্পের মাত্র ৬.৬। যা ভূতত্ত্ববিদদের মত প্রবল কম্পন। যার জেরে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়ায় দিল্লি, পঞ্জাব-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায়। এই সব অঞ্চলে বহু বহুতলের বাড়ি রয়েছে। সেখানে কম্পন চরম অনুভূত হয়েছে। রাতে যে সব অফিস চলে সেখানে থেকে এবং বিভিন্ন বাড়ি থেকে লোকজন আতঙ্কে রাস্তায় নেমে আসেন।
Advertisment
উত্তর ভারতে ৬ মাত্রার ওপরে কম্পন অবশ্য প্রথমবার অনুভূত হল না। এর আগে ২০১৮ সালেও ৬ মাত্রার ওপর কম্পনের সাক্ষী হয়েছেন উত্তর ভারতের বাসিন্দারা। সেবার কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.১। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবারের কম্পন শুধু উত্তরই নয়, জয়পুরের মত পশ্চিম ভারতের বেশ কিছু অঞ্চলের কাছে বিপদ সংকেত।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র উত্তর ভারতই নয়। ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, চিন, কাজাখস্তান, তুর্কমেনিস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, কিরঘিজস্তানের মত দেশগুলো এই ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির তরফে জানানো হয়েছে, এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল আফগানিস্তানের ফয়জাবাদ থেকে ১৩৩ কিলোমিটার দূরে। ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৫৬ কিলোমিটার গভীরে এই উৎসস্থল। কম্পনটি অনুভূত হয়েছে রাত ১০টা ১৭ মিনিট ২৭ সেকেন্ডে। যদিও আফগানিস্তানে আজকেই আরও কম্পন অনুভূত হয়েছে। তবে, সেই কম্পনের মাত্রা ছিল কম। যেমন, আজই দুপুর ১২টা ৫৫ নাগাদ কম্পন অনুভূত হয় আফগানিস্তানে। কম্পনের মাত্রা ছিল ৪.৪। গভীরতা ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১১০ কিলোমিটার গভীরে।
বিশেষজ্ঞরা অতীতে বারবার বলেছেন, কম্পনের কেন্দ্রস্থল ভূপৃষ্ঠ থেকে যত গভীরে হবে, ততই কম্পনের মাত্রাও বেশি হবে। সেই হিসেবে দুপুরের তুলনায় রাতে কম্পনের উৎসস্থল ছিল অনেক বেশি গভীর। যার ফলে কম্পনের মাত্রাও বেশি হয়েছে। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি আফগানিস্তানে বারবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এগুলো বড় ভূমিকম্পের 'আফটার শক' বলেই বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
তাঁরা বলেছেন, কোনও জায়গায় ভূমিকম্প হলে, ভূপৃষ্ঠের নীচে থাকা পাথরের প্লেটগুলো স্থানচ্যুত হয়। আর এর ফলে যে ভারসাম্যের অভাব তৈরি হয়, তার জেরে এমন কম্পন বারেবারে ঘটতে থাকে। ২০২২ সালের ২২ জুন, এর আগে আফগানিস্তানে বড় আকারে ভূমিকম্প হয়েছিল। সেবার কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.২। তাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। এবারের কম্পনের মাত্রা তার তুলনায় বেশি।