শুক্রবার জোরালো ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ইন্দোনেশিয়া। শুধু তাই নয়, ভূমিকম্পের পাশাপাশি সুনামি আছড়ে পড়ল ওই দ্বীপরাষ্ট্রে। ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপের পালু শহরে ভূমিকম্প ও সুনামিতে কমপক্ষে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে শনিবার মেট্রো টিভিতে এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। একটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফেই এই খবর জানানো হয়। রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ৭.৫ বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি শনিবার সকালে উপকূলবর্তী শহরে ঢেউয়ের উচ্চতা ছুঁয়েছে ৬ ফিট।
অন্য একটি টিভি চ্যানেলের ফুটেজে দেখা গিয়েছে যে, হু হু করে জল ঢুকছে পালু শহরে। শহরের একটি মসজিদেও জল ঢোকার ছবি ওই ফুটেজে দেখা গিয়েছে। জাতীয় দুর্যোগ প্রতিরোধ সংস্থার মুখপাত্র সুতোপো পুরওয়ো নুগ্রোহো জানিয়েছেন, "মৃতদের দেহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সুনামির জেরে বহু বাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে...তবে এখনও আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি।"
অন্যদিকে, মেট্রো চ্যানেলে একটি হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান যে, ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই ৩০ জনকে তাঁর হাসপাতালে আনা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। আরও ১২ জন জখম হয়েছেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন, জোরালো ভূমিকম্পে কাঁপল ইন্দোনেশিয়া
ভূমিকম্প ও সুনামির জেরে কার্যত বিধ্বস্ত ইন্দোনেশিয়ার পালু শহর। গোটা শহর বিদ্যুৎহীন, যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। শনিবার এলাকায় উদ্ধারকাজে সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে প্রশাসনকে। উদ্ধারকাজে সাহায্যের জন্য রাজধানী জাকার্তা থেকে কার্গো বিমান পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিফ সিকিউরিটি মিনিস্টার। মেট্রো টিভির ফুটেজে দেখা গিয়েছে, সুনামিতে একটি ব্রিজ ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। বহু বাড়ি যেমন ভেঙে পড়েছে, তেমনই বহু রাস্তায় নেমেছে ধ্বস।
শহরের বিমানবন্দরে বিমান পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিমানবন্দরের রানওয়ে ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে বিমানবন্দর যত দ্রুত সম্ভব খোলা যায় তার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গিয়েছে।
পৃথিবীর কম্পনপ্রবণ দেশগুলির মধ্যে অন্যতম ইন্দোনেশিয়া। গত জুলাই ও অগাস্ট মাসেও ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে ইন্দোনেশিয়া। সে সময়ে প্রায় ৫০০ জনের মৃত্যু হয়। উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর সুমাত্রা দ্বীপে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প হয়। যার জেরে সুনামির কবলে পড়ে আশেপাশের ১৩টি দেশ, যাদের মধ্যে ভারতও ছিল। ইন্দোনেশিয়াতে সেসময় মৃতের সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ২০ হাজারেরও বেশি। সব দেশ মিলিয়ে দু’লক্ষেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।