লেবার রুমের অপরিচ্ছন্নতাই কি ডেকে আনছে ভয়াবহ সংক্রমণ? কী জানাল গবেষণা

গবেষকরা এই লেবার রুম এবং মেটারনিটি ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সেই সঙ্গে এই ওয়ার্ড গুলির ওপর ফোকাস করার দিকে জোর দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে গবেষণায়।

গবেষকরা এই লেবার রুম এবং মেটারনিটি ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সেই সঙ্গে এই ওয়ার্ড গুলির ওপর ফোকাস করার দিকে জোর দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে গবেষণায়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

লেবার রুমেই লুকিয়ে বিপদ

একাধিক হাসপাতালের লেবার রুম এবং মেটারনিটি ওয়ার্ডে বাসা বেঁধে রয়েছে ভয়ঙ্কর ব্যক্টেরিয়া, ভাইরাস। আদতে পরিষ্কার দেখতে লাগলেও লেবার রুম এবং মেটারনিটি ওয়ার্ডের ওপর সাম্প্রতিকতম গবেষণার ফলাফল চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে কপালে। IIPH-G এবং পাবলিক হেলথ ইনস্টিটিউটের গবেষকরা দেখেছেন, আদতে পরিষ্কার দেখালেও এই সব ওয়ার্ডেই বাসা বেঁধে রয়েছে ভয়ঙ্কর ব্যক্টেরিয়া।

Advertisment

গুজরাতে ১০ টি হাসপাতাল থেকে সংগৃহীত ১৯৫টি নমুনার মধ্যে ১৮.৫ শতাংশ নমুনাতে দেখা গিয়েছে ওই সকল ওয়ার্ডে রয়েছে ব্যাকটেরিয়া দূষণ। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দূষিত ওয়ার্ড হিসাবে উঠে এসেছে লেবার রুম। তারপর রয়েছে মেটারনিটি ওয়ার্ড এবং শেষে রয়েছে জেনারেল ওয়ার্ড। মূলত বিছানা, মপস, সিঙ্ক-ট্যাপ, বালতির মত জায়গাগুলিতেই ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, প্যাথোজেন গুরুতর সংক্রমণের জন্য দায়ী। প্রধানত ইমিউনোকম্প্রোমাইজড রোগীদের মধ্যে মূত্রনালীর সংক্রমণ এবং ভেন্টিলেটরে থাকা রোগীদের মধ্যে নিউমোনিয়ার এটিই প্রধান কারণ। এর ফলে ঘটতে পারে প্রাণ সংশয়।

Advertisment

৩০ মার্চ MDPI-এর এক মাসিক 'হেলথকেয়ার' জার্নালে প্রকাশিত এই সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে, “সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে বেশিরভাগ মূত্রনালীর সংক্রমণ (ইউটিআই) বেশি রিপোর্ট করা হয়েছে। রোগীদের মধ্যে ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া এবং ই. কোলির বিচ্ছিন্নতার আধিপত্য রিপোর্ট করা হয়েছে। ইউটিআই গর্ভাবস্থায় প্রসবের আগে এবং পরে মা এবং ভ্রূণের জটিলতা যেমন  পাইলোনেফ্রাইটিস (কিডনি সংক্রমণ), সেপসিস, সেপটিক শক, অ্যানিমিয়া, তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী রেনাল ব্যর্থতা, অকাল প্রসব এবং ভ্রূণের মৃত্যু। ইউটিআই-এর চিকিৎসায় অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স সমস্যা।"

মূত্রনালীর সংক্রমণ বা UTI (ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশান) দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার সর্বাধিক ঝুঁকির মুখে রয়েছেন মহিলারা। এই সংক্রমণ আবার মহিলাদের প্রজনন ক্ষমতাকেও প্রভাবিত করে। পুরুষ ও মহিলা উভয়েই মূত্রনালীর সংক্রমণ দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন। তবে মহিলাদের মধ্যে আক্রান্তের সম্ভবনা বেশি। মূত্রাশয়ের সঙ্গে জড়িত অঙ্গ, যেমন কিডনি, মূত্রনালী, ব্লাডার এবং লিভার (যে অঙ্গগুলি শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ দূর করে)-এ এই সংক্রমণ হতে পারে। মহিলাদের মূত্রনালী ছোট হওয়ায় তাঁরা শীঘ্র মূত্রনালীর সংক্রমণে আক্রান্ত হতে পারেন।

কিছু কিছু মহিলা ঘন ঘন মূত্রনালীর সংক্রমণের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে পড়েন। কখনও কখনও এই সংক্রমণ আবার উর্ধ্বাংশের মূত্রনালী এবং কিডনি, ফ্যালোপিয়ন টিউব এবং ইউটেরাসের মতো অঙ্গকে প্রভাবিত করে। আবার কোনও মহিলা যদি ক্লামিডিয়া, সিফিলিস ইত্যাদির মতো ব্যাক্টিরিয়া জনিত সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিসিসের কারণে UTI-র শিকার হয়, তা হলে এই সংক্রমণ শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা আরও বৃদ্ধি পায়।

সেই সঙ্গে গবেষকরা এই লেবার রুম এবং মেটারনিটি ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সেই সঙ্গে এই ওয়ার্ড গুলির ওপর ফোকাস করার দিকে জোর দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে গবেষণায়।

labour rooms bacteria