রাজধানী শহর দিল্লিতে বায়ুদূষণের মাত্র আকাশছোঁয়া। কিছুতেই বাতাসের স্বাস্থ্যের উন্নতি হচ্ছে না। দিওয়ালির পর থেকে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছে যে বন্ধ রাখতে হয়েছে স্কুল। দিন দিন দিল্লির বায়ু দূষণ পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। দুষণের কারণে অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতার মত রোগের প্রকোপ বাড়ছে বহুগুণে। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর এই তথ্য।
বাতাসে ভাসমান অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণা পিএম ২.৫-এর মাত্রা বেড়েই চলেছে। ২০১৯ সালের তথ্য অনুসারে অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণা পিএম ২.৫-এর প্রভাবে সারা বিশ্বে প্রায় ১৭ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু তা থেকেও সাবধান হতে পারিনি আমরা। পিএম ২.৫-এর দূষণে বিশ্বের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে দিল্লি।
দূষণের কারণে বিশেষ করে বৃদ্ধ, শিশু ও কাশি ও হাঁপানিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অসুবিধায় পড়তে হয়। অনেকেরই শ্বাসকষ্টের মত উপসর্গ দেখা দেয়। এর পাশাপাশি বায়ু দূষণের কারণে অন্যান্য রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষজন।
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রক বোর্ডের তথ্য অনুসারে বায়ুদূষণের পরিমাণকে কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। শূন্য থেকে ৫০ পর্যন্ত রিডিং হলে সেটি ভালো। ৫১-১০০ পর্যন্ত সন্তোষজনক। ১০১-২০০ রিডিং উঠলে সেই অঞ্চল মাঝারি মাপের বলে ধার্য হবে। ২০১-৩০০ হলে তাকে উদ্বেগজনক বলে চিহ্নিত করা হবে। ৩০১ থেকে ৪০০ খুবই গুরুতর এবং ৪০১-৫০০ রিডিং হলে সেটা বিপজ্জনক বলে বিবেচিত হবে। এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্সের (AQI) রিডিং অনুযায়ী রাজধানীর একাধিক এলাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা উদ্বেগজনক পর্যায়ে রয়েছে।
আরও পড়ুন: < গ্যাঁটের কড়ি খসালেই ওপিডি-তে ‘জামাই আদর’, NRS-এর পরিষেবায় ব্যাপক ক্ষোভ >
কী বলা হয়েছে সমীক্ষায়? সমীক্ষা অনুসারে, ভারত যদি সাম্প্রতিক ‘ক্লিন-এয়ার’ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে, তাহলে ১৮৬টি জেলায় অ্যানিমিয়ার প্রকোপ ৫৩ শতাংশ থেকে ৩৯.৫ শতাংশে নেমে আসবে। অগাস্টের শেষের দিকে নেচার সাসটেইনেবিলিটি জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণাটি আইআইটি-দিল্লি এবং আইআইটি-বোম্বে সহ ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চিনের গবেষকরা করেছেন। গবেষণায় বলা হয়েছে যে প্রতি দশ মাইক্রোগ্রাম/ঘন মিটার বায়ু পরিবেষ্টিত PM2.5 এক্সপোজারে বৃদ্ধির জন্য, মহিলাদের মধ্যে গড় রক্তাল্পতার প্রাদুর্ভাব ৭.২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
ভারতে রক্তাল্পতায় ভোগা মহিলাদের সংখ্যা তুলনায় অনেকটাই বেশি। ন্যাশনাল ফ্যামিলি অ্যান্ড হেলথ সার্ভে ২০১৫-২০১৬ (NFHS-4) রিপোর্ট করেছে যে WRA এর ৫৩.১% এবং পাঁচ বছরের কম বয়সী ৫৮.৫% শিশু অ্যানিমিক ছিল। রক্তাল্পতা-মুক্ত ভারত গড়ার লক্ষ্যে অ্যানিমিয়াকে ৩৫%-এর নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।