নির্মলা সীতারামন কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করার পরই আলোচনায় উঠে এসেছে ৭০ বছর বয়সী এক কৃষকের নাম। সুভাষ পালেকর নামে মহারাষ্ট্রের ওই কৃষক ভারতে জিরো বাজেট কৃষিকাজ সংক্রান্ত ধারণার পথিকৃৎ। বাজেট পেশের সময় নির্মলা সুভাষের প্রশংসা করে জানান, আগামীর উন্নতির জন্য রাসায়নিক পেস্টসাইড বর্জন করা অত্যন্ত জরুরি। সুভাষ যে পদ্ধতিতে কৃষিকাজ করেন, তা একদিকে যেমন কৃষকের চাষের খরচ বিপুল পরিমাণে হ্রাস করে, অন্যদিকে পরিবেশের পক্ষেও উপযোগী।
ইকোনমিক সার্ভের সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশে এই মূহুর্তে ১ লক্ষ ৬৩ হাজার ৩৪ জন কৃষক জিরো বাজেটে কৃষিকাজ করেন। যদিও পালেকরের দাবি, সংখ্যাটি প্রায় ৫০ লক্ষের কাছাকাছি।
জিরো বাজেট কৃষিকাজের ধারণা অনুযায়ী, কৃষকদের কীটনাশক বা রাসায়নিক সারের জন্য কোনও খরচ করতে হয় না। কারণ, কৃষিকাজের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানের ৯৮ শতাংশই প্রকৃতিতেই অবস্থান করে। এই উপাদানগুলির মধ্যে রয়েছে- কার্বন ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন, জল এবং সূর্যশক্তি। বাকি ২ শতাংশ উপাদান মাটি থেকে পাওয়া সম্ভব।
পালেকার জানান, ১৯৯০ সাল থেকে মহারাষ্ট্রের অমরাবতী জেলার বেলুড়া গ্রামে নিজের বাড়িতে তিনি জিরো বাজেট কৃষিকাজ শুরু করেছেন। গোবর, গোমূত্র, জল ইত্যাদি সহজলভ্য উপকরণ ব্যবহার করে চাষ করায় তাঁর খরচের পরিমাণ প্রায় নেই বললেই চলে। সার হিসাবেও তিনি এই উপাদানগুলিই ব্যবহার করেন।
পাশাপাশি, পালেকর কীটনাশক হিসাবে গোবর ও গোমূত্রের সঙ্গে নিমগাছের পাতা, পেঁপে পাতা ও পেয়ারা পাতার মিশ্রন ঘটিয়েছেন। তাঁর দাবি, যে কোনও রাসায়নিক কীটনাশকের চেয়ে এগুলি অনেক বেশি কার্যকরী। অনেকের মতে, পালেকরের জিরো বাজেট কৃষিকাজ কার্যত অর্গ্যানিক ফার্মিং-এরই নামান্তর। কিন্তু তা মানতে নারাজ মহারাষ্ট্রের ওই কৃষক। তাঁর মতে, জৈব চাষ পাশ্চাত্যের ধারণার দ্বারা প্রভাবিত। তাতে স্বল্প পরিমাণে হলেও কৃষির পরিবেশের ক্ষতি হয়। কিন্তু জিরো বাজেট কৃষিকাজ সম্পূর্ণতই ভারতের নিজস্ব কৃষিপদ্ধতির দ্বারা প্রাণিত।
২০১৩ সালে পদ্মশ্রী পাওয়া ওই কৃষক জানান, ইতিমধ্যেই কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, ছত্তিশগড়, কর্ণাটক-সহ একাধিক রাজ্যের সরকার জিরো বাজেট কৃষিকাজের সুফল বুঝতে পেরে এর প্রসারে সাহায্য করছেন।
Read the full story in English