২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গা মামলা নিয়ে আর মাথা ঘামাচ্ছে না দেশের শীর্ষ আদালত। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য এবার সামনে এল। সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে গোধরা পরবর্তী ৯টি হিংসা মামলার তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গড়া হয়েছিল। সিট মারফৎ জানা গিয়েছে যে, এই মামলাগুলি আর পর্যবেক্ষণ করছে না দেশের সর্বোচ্চ আদালত। শুধু তাই নয়, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে জানানো হয়েছে, নারোদা গাম মামলার বিচারপ্রক্রিয়া অক্টোবরের মধ্যে শেষ করতে হবে। শীর্ষ আদালতের তরফে সিটকে এও জানানো হয়েছে যে, সব মামলা যুক্তিযুক্ত ভাবে শেষ করতে হবে।
২০০২ সালে গুজরাত দাঙ্গা মামলা রাজ্যের বাইরে অন্যত্র স্থানান্তরিত করার আবেদন জানিয়ে ১৫ বছর আগে পিটিশন দাখিল করেছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। যার একটি পিটিশনের নিষ্পত্তি করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের তরফে। ওই পিটিশনের দৌলতেই ২০০৮ সালে গোধরা পরবর্তী ৯টি হিংসার মামলার তদন্তে সিট গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল আদালতের তরফে। যেখানে বলা হয়েছিল যে, মামলাগুলি সুপ্রিম কোর্টের অধীনে সম্পন্ন করা হবে। মামলাগুলিতে সর্বোচ্চ আদালতের যে নজরদারিও থাকবে তাও উল্লেখ করা হয়েছিল।
ওই ৯টি মামলার শুনানি নিয়ে গত ২৩ জুলাই নয়া নির্দেশ পৌঁছয় দাঙ্গা সম্পর্কিত বিশেষ আদালতে। যে রায়ে জানানো হয় যে, এই মামলাগুলির আর নজরদারি করছে না সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে মামলাগুলি যথাযথ ভাবে শেষ করতে সিটকে নির্দেশ দেওয়া হয়। নারোদা গাম মামলার বিচারপ্রক্রিয়া চলতি বছরের ১৬ অক্টোবরের মধ্যে শেষ করার কথা বলা হয়। শুক্রবার শীর্ষ আদালতে এ নিয়ে সিটের তরফে জানতে চাওয়া হয় যে, আদৌ নারোদা গাম মামলা নিয়ে যা অগ্রগতি হচ্ছে তা জানাতে হবে কিনা। একইসঙ্গে সিটের তরফে জানানো হয় যে অন্য দাঙ্গা মামলার আপিল আবেদন এখনও বাকি রয়েছে।
আরও পড়ুন,জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা নিয়ে শুনানি স্থগিত শীর্ষ আদালতে, চলছে বনধ
দাঙ্গা পরবর্তী সময়ে মামলা ভুলভাবে চালনা করার অভিযোগ উঠেছিল গুজরাত সরকারের বিরুদ্ধে। বদোদরায় বেস্ট বেকারি খুনের ঘটনায় সব অভিযুক্ত বেকসুর খালাস হন। যার পরই নজিরবিহীন ভাবে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এ নিয়ে তারা রিট পিটশন দাখিল করে। সেসময়ই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তরফে একটি আবেদনে বলা হয় যে, গুজরাতের বাইরে মামলা সরানো হোক। এরপর মুম্বইয়ে বেস্ট বেকারি মামলা ফের শুরু হয়, যেখানে দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০০৩ সাল থেকে চলতি বছরের ২৩ জুলাই পর্যন্ত এ নিয়ে মোট ৮০টি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের তরফে। অন্যদিকে, ৮টি দাঙ্গার ঘটনায় ৮০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। যাদের মধ্যে নাম ছিল প্রাক্তন বিজেপি মন্ত্রী মায়া কোদনানির। পরে অবশ্য গুজরাত হাইকোর্ট থেকে তাঁকে বেকসুর খালাস করা হয়।