সিবিআই মামলায় সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিটির রিপোর্টের প্রেক্ষিতে অলোক ভার্মার জবাব ফাঁস হওয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। আর এরপরই ক্ষুব্ধ বিচারপতিরা এই মামলা এদিনের মতো মুলতুবি করে দেন।
সিবিআই ডিরেক্টর অলোক ভার্মার বিরুদ্ধে তদন্ত করেছে সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশন। ভার্মাকে নিয়ে প্রকাশিত সেন্ট্রাল ভিজিলান্স কমিটির রিপোর্টের প্রেক্ষিতে ভার্মার জবাব দেওয়ার জন্য তাঁকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। সেই মোতাবেক গতকালই আদালতে লিখিতভাবে জবাব জমা দেন অলোক ভার্মা। এ প্রসঙ্গে দেশের শীর্ষ আদালতের তরফে নির্দেশে বলা হয়েছিল যে, যথার্থ গোপনীয়তার সঙ্গেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এদিকে তা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এদিন অসন্তোষ প্রকাশ করে সর্বোচ্চ আদালত। এ নিয়ে এ মামলার পরবর্তী শুনানি ২৯ নভেম্বর।
সিভিসিকে দেওয়া ভার্মার জবাব ফাঁস হয়েছে একটি সংবাদমাধ্যমে। একটি নিউজ পোর্টালে ভার্মার জবাব নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সংশ্লিষ্ট নিউজ পোর্টালের নাম না উল্লেখ করে ওই প্রতিবেদনের কপিটি আইনজীবী নরিম্যানকে দেয় প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর বেঞ্চ। এদিন ভার্মার আইনজীবী নরিম্যানের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের তরফে বলা হয়, ‘‘আপনি অলোক ভার্মার আইনজীবী বলে নয়, আমরা আপনাকে এটা দিয়েছি শুধুমাত্র আপনি একজন সিনিয়র আইনজীবী বলে। আপনিই দয়া করে বলুন কী করণীয়।’’ প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি এস কে কৌল ও বিতারপতি কে এম জোসেফ।
আরও পড়ুন, সিভিসি রিপোর্ট অলোক ভার্মার কাছে পাঠানোর নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
এরপর আইনজীবী নরিম্যান আদালতে জানান যে, এটা একবারেই অনুমোদন করা যায় না। ভার্মার জবাব এভাবে ফাঁস হওয়া নিয়ে তিনিও যে বিরক্ত, সেকথাও উল্লেখ করেন নরিম্যান। এরপরই প্রধান বিচারপতি নরিম্যানকে বলেন যে, ভার্মার আরেক আইনজীবী শংকরানারায়নন সোমবার বিষয়টি আদালতে উল্লেখ করেছিলেন এবং সিবিআই ডিরেক্টরের হয়ে জবাব পেশ করার জন্য অতিরিক্ত সময় চেয়েছিলেন।
এদিন আদালতে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চকে নরিম্যান জানান, ‘‘কেউই ওঁকে(শঙ্করানারায়নন) একাজ করতে বলেননি। এতে একেবারেই অনুমোদন ছিল না। আমায় কেউ কিছু জানানি। কেউ ওঁকে বিষয়টি উল্লেখ করতে বলেননি। আমি খুবই বিরক্ত।’’
অন্যদিকে, সংবাদমাধ্যমের ওই প্রতিবেদন প্রসঙ্গে নরিম্যান বলেন যে, সংশ্লিষ্ট নিউজ পোর্টাল ও তার সাংবাদিককে ডেকে পাঠাবে আদালত। তিনি এও বলেন যে, দায়িত্বশীল সংবাদমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার কাছে এটা একটা নতুন টুইস্ট।
এর পরই আজকের শুনানি মুলতুবি করে দেয় শীর্ষ আদালত। আগামী ২৯ নভেম্বর এ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। এদিন শুনানি শেষে বেঞ্চের তরফে বলা হয় যে, ‘‘আমরা মনে করি না যে, কোনও শুনানি আপনাদের জন্য প্রাপ্য।’’
সিবিআই ডিরেক্টর অলোক ভার্মার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন সিবিআইয়ের স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানা। সেই দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করছে সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশন। সিবিআইয়ের দুই শীর্ষকর্তার দ্বন্দ্ব নিয়ে শেষপর্যন্ত দু’জনকেই ছুটিতে পাঠায় কেন্দ্রীয় সরকার। দু’জনেই পরে এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন।
Read the full story in English