সিএএ-তে স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সিএএ নিয়ে কেন্দ্রের জবাব তলব করল সর্বোচ্চ আদালত।
নয়া আইনের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে ১৪০ মামলার শুনানি হয় এদিন। সিএএ মামলা সর্বোচ্চ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চে যেতে পারে বলে শুনানির প্রথমে জানিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি বোবদে। আইনজীবী ও সিএএ মামলার অন্যতম আবেদনকারী কপিল সিবাল এদিন আদালতে বলেন, 'আগামী তিন মাসের মধ্যেই সিএএ নিয়ে চূড়ান্ত রায় জানাবে আদলত। সেই তিন মাস এনপিআর কার্যক্রম স্থগিত রাখা হোক।' কেন্দ্রের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল বেণুগোপাল বলেন, ‘১৪৩ আবেদনের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে ৬০টি আবেদনের বিষয়ে জানানো হয়েছিল। এক্ষেত্রে বাড়তি সময় চাই।’ প্রধান বিচারপতি জানান, কেন্দ্রের বক্তব্য না শুনে সিএএ-এর উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হবে না। বাকি আবেদনের জবাব দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে দেড় মাসের সময় দাবি করে কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্ট সিএএ-তে স্থগিতাদেশ না দিলেও, এবিষয়ে জানানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে চার সপ্তাহের সময়সীমা নির্ধারিত করেছে।
প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন বিচারপতি এস আবদুল নাজির ও বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এদিন সিএএ মামলার শুনানি হয়।
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি সিএএ বিরোধিতায় ৬০ টি মামলার শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টে। আবেদন সত্ত্বেও সেদিন নয়া নাগরিকত্ব আইনের উপরে স্থগিতাদেশ দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। তার বদলে, সাধারণ মানুষের বিভ্রান্তি কাটাতে সিএএ-র উদ্দেশ্য সম্পর্কে যথেষ্ট প্রচার করতে কেন্দ্রীয় সরকার পরামর্শ দেন প্রধান বিচারপতি। বিচারপতি বোবদে বলেছিলেন, 'কেন এই আইন পাস হয়েছে, তা নিয়ে যথেষ্ট প্রচার প্রয়োজন।'
আরও পড়ুন: সিএএ বিরোধিতায় এবার কং-বামেদেরই পাশে চাইলেন মমতা
২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে শুনানির জন্য প্রথমবার সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন জমা পড়ে। তার পরেই সুপ্রিম কোর্ট নোটিস দিয়ে কেন্দ্রকে জানায়। অবশ্য, সেই সময় শীর্ষ আদালতে সিএএয়েরর বিরোধিতায় ৬০টি পিটিশন জমা পড়েছিল। এরপরই মোদী সরকারের তরফে সিএএ সংক্রান্ত যাবতীয় মামলা একসঙ্গে শুনানির জন্য হাইকোর্টগুলি থেকে সুপ্রিম কোর্টে স্থানান্তরের আর্জি জানায়।
২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর সংসদে সংশোধিত নাগরিক আইন পাস হয়। বিলে বলা হয়েছে, ২০১৪ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ভারতে আগত ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার অ-মুসলিমদের (হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ, পার্সি, ও খ্রিস্টান) এদেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: ‘সিএএ কার্যকর করব না বলাটা অসাংবিধানিক’, মত কংগ্রেসের কপিল সিবালের
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেছেন, এই বিল একেবারেই মুসলিম বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরোধী নয়। তাঁর দাবি ভারতের মুসলমানদের উপর এই বিলের কোনও প্রভাবই পড়বে না। তাঁরা যেমন ভারতের নাগরিক আছেন, তেমনই থাকবেন। নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে শরণার্থীদের কোনও প্রমাণ দাখিল করতে হবে না বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে খবর।
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের দায়ের করা আবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে নাগরিকত্ব অর্জন বা অস্বীকার করার জন্য ধর্ম কোনও কারণ হতে পারে না। এই নাগরিকত্ব আইনটি অ-সাংবিধানিক। আইউএমএল-এর বক্তব্য, সিএএতে সাম্যের অধিকার, মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করে, ধর্মের ভিত্তিতে অবৈধ অভিবাসীদের একটি অংশকে নাগরিকত্ব প্রদান করার ইচ্ছা পোষণ করা হয়েছে।
সিএএয়ের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছে কেরালা সরকার। বিজয়নের রাজ্যের তরফে বলা হয়েছে, এই আইন সংবিধান প্রদত্ত সাম্য, স্বাধীনতা ও ব্যক্তি অধিকারে আঘাত।
Read the full story in English