Kolkata Doctor Rape and Murder Case: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা ভয়াবহ। এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ এইভাবেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সেই সঙ্গে যেভাবে নির্যাতিতার নাম, ছবি-সহ পরিচয় সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে তা উদ্বেগজনক বলে প্রতিক্রিয়া প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের।
এদিন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় প্রশ্ন করেন, মহিলারা নিরাপদে কাজে যেতে না পারলে, সমাজে সবার অধিকার থাকবে কী ভাবে? তাঁর মন্তব্য, 'মৃতার নাম ও ছবি ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেখানো হচ্ছে।' সুপ্রিম কোর্ট এই হামলার ঘটনায় গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করে, প্রশ্ন করে, কেন রাত পর্যন্ত হাসপাতালে কেউ এফআইআর দায়ের করেনি।
“ময়নাতদন্তে জানা গেছে যে আরজি করে ডাক্তারকে খুন করা হয়েছিল এবং বেলা ১১.৪৫ মিনিটে এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছিল। হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ কী করছিল?” শীর্ষ আদালত প্রশ্ন তুলেছে।
আরও পড়ুন যৌনাঙ্গ-সহ শরীরে একাধিক আঘাত, শ্বাসরোধ করে চিকিৎসককে খুন, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য
পুলিশ এবং রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে
পাশাপাশি, পুলিশ এবং আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করে শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি জানান, 'তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। অধ্যক্ষ এই খুনের ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালাতে চেয়েছিলেন। এমনকী পরিবারকেও মৃতদেহ দেখতে দেওয়া হয়নি।' তখন রাজ্যের তরফে আইনজীবী জানান, এই অভিযোগগুলি সম্পূর্ণ সঠিক নয়। তা শুনে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'এটা পরিষ্কার যে খুন করা হয়েছে। প্রথম এফআইআরে কি সেটা উল্লেখ ছিল, অধ্যক্ষ কী করেছেন?'
পুলিশের ভূমিকা নিয়েও উষ্মা জানিয়েছে আদালত। আরজি কর হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শীর্ষ আদালত। সামগ্রিক ঘটনায় প্রশ্ন তুলে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'প্রথমে সঠিকভাবে এফআইআর করা হয়নি। পুলিশ কী করছিল! একটা হাসপাতালের মধ্যে এত বড় ঘটনা ঘটে গেল. পুলিশ হাসপাতাল ভাঙচুর করার অনুমতি দিচ্ছিল?'
মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'এটা নির্দিষ্ট কোনও ঘটনা নয়। আমরা দেশ জুড়ে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। চিকিৎসকরা যাতে নিরাপদে কাজ করতে পারেন সেই দিকটি নিশ্চিত করা দরকার।'
সুপ্রিম কোর্ট সন্দীপ ঘোষের ইস্তফা দেওয়ার পর অন্য মেডিক্যাল কলেজে তাঁর পুনর্বাসন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে এই মামলায় সিবিআইকে স্টেটাস রিপোর্ট দিতে হবে। প্রধান বিচারপতি এদিন বলেছেন, একটি ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স গঠন করা হবে। চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখবে সেই টাস্ক ফোর্স।
জাতীয় টাস্ক ফোর্সে নিম্নলিখিত ডাক্তার এবং চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা থাকবেন:
- সার্জন ভাইস অ্যাডমিরাল আর সারিন
- ড. ডি নাগেশ্বর রেড্ডি
- ড. এম শ্রীনিবাস
- ড. প্রতিমা মূর্তি
- ড. গোবর্ধন দত্ত পুরী
- ড. সৌমিত্র রাওয়াত
- অধ্যাপক অনিতা সাক্সেনা, হেড কার্ডিওলজি, AIIMS (নয়াদিল্লি)
- অধ্যাপক পল্লবী সাপ্রে, ডিন গ্রান্ট মেডিকেল কলেজ (মুম্বাই)
- ড. পদ্মা শ্রীবাস্তব, নিউরোলজি বিভাগ, AIIMS
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, "আসুন আমরা এটিকে একটি রাজনৈতিক ইস্যু না করি এবং আমি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারকে এই ঘটনা অস্বীকার করার মোডে না থাকার জন্য অনুরোধ করছি… এটি রাজ্যজুড়ে আইনশৃঙ্খলার সম্পূর্ণ ব্যর্থতা।" "আমরা ডাক্তারদের কাজ পুনরায় শুরু করার জন্য অনুরোধ করছি এবং যদি রোগীরা তাঁদের জীবন হারায়.. আমরা ডাক্তারদের কাছে আবেদন করছি যে আমরা তাঁদের নিরাপত্তা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখানে আছি," বলেছেন CJI চন্দ্রচূড়৷ সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে বিক্ষোভকারীদের উপর রাষ্ট্রশক্তি প্রয়োগ না করতে।