আসামের জাতীয় নাগরিক পঞ্জী (NRC)-র চূড়ান্ত খসড়া নিয়ে দু'জন সরকারি কর্মকর্তাকে তীব্র ভর্ৎসনা করলেন সুপ্রিম কোর্ট। আদালত অবমাননার অভিযোগও উঠছে দুই NRC কোঅর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলা এবং শৈলেশের বিরুদ্ধে। সংবাদমাধ্যমের সামনে ৪০ লাখ নাম তালিকার বাইরে থাকা নিয়ে "বেফাঁস" মন্তব্য করেন এনআরসির দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মকর্তা, যে কারণে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট কড়া ভাষায় নিন্দা করলেন তাঁদের।
হাজেলা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, NRC প্রক্রিয়াটি নিয়ে যেভাবে কাজ করা হলো, তা একেবারেই ‘অপরিণত’ ছাড়া আর কিছুই নয়। এ ছাড়া, তালিকার বাইরে এমন বহু মানুষের নাম রয়েছে, যারা কোনওভাবেই ‘অনুপ্রবেশকারী’ নন।
৩১ জুলাই সমস্ত ঘটনা শোনার পর আগামী ১৬ অগাস্ট পরবর্তী শুনানির তারিখ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার একটি বিশেষ বৈঠকের আয়োজন করেন আদালত। তবে আদালত এও জানায় তা ঠিকমতো হয়নি নানা কারণেই।
সংবাদপত্রের খবরের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি রঞ্জন গগৈ হাজেলাকে বলেন, "আপনি কি বলতে পারেন এটা কী? আপনাকে আদালত নিযুক্ত করেছে। এগুলো কী? আপনি একজন আদালত নিযুক্ত অফিসার, এই অবস্থায় আপনি কিছু বললে তা আদালতের ওপর প্রভাব ফেলবে।" এতে ক্ষমা চান হাজেলা। তবে তাঁর ক্ষমা চাওয়াকে কটাক্ষ করে বিচারপতি বলেন "কিসের ক্ষমা? এই বিষয়টিকে আমার খুবই অদ্ভুত লাগছে। আমি খুবই বীতশ্রদ্ধ।"
হাজেলার দেওয়া বিবৃতির সম্পর্কে বিচারপতি গগৈ বলেন, "একদিকে আমরা সরকারকে Standard Operating Procedure জমা দিতে বলছি। অন্যদিকে আপনি জানাচ্ছেন এখনও বেশ কিছু ডকুমেন্ট অন্তর্ভুক্ত করা হবে।" উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেন রেজিস্ট্রার জেনারেল শৈলেশ। এতে তাঁর দিকে তাকিয়ে বিচারপতি বলেন, "এসব কথা আপনি বলার কে? আপনাদের উভয়কেই অবমাননার অভিযোগে জেলে পাঠানো উচিৎ।"
এদিন বিচারপতি নরিম্যান হাজেলাকে জিজ্ঞেস করেন, "কী কারণে আপনি প্রেসের কাছে গিয়েছিলেন?" তিনি আরও বলেন, "দয়া করে এটা আর করবেন না।" পাশাপাশি সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, এবার অন্যথায় তাঁর বিরুদ্ধে কঠোরতর পদক্ষেপ নেবেন আদালত। দুই বিচারপতির বেঞ্চ কর্মকর্তাদের জানায়, "আপনার কাজ শধু একটি NRC প্রস্তুত করা। আদালত শুধু এই কাজটিই আপনাদের দিয়েছে। এ নিয়ে কোনও বাড়তি বিবৃতি দেওয়া আপনাদের কাজ নয়।" আদালত আরও বলেন যে, ভবিষ্যতে এ বিষয়ে কোনও বিবৃতি তৈরি করার আগে, কর্মকর্তাদের অবশ্যই আদালতের নির্দেশাবলী অনুসরণ করতে হবে।