পুজো অনুদান মামলায় সুপ্রিম কোর্টেও আপাতত 'জয় পেল' পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এর ফলে অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে আর কোনও বাধা রইল না। এদিন পুজো অনুদানের উপর স্থগিতাদেশ দেয়নি আদালত। এর আগে কলকাতা হাইকোর্টও রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে চায়নি। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতে স্পেশ্যাল লিভ পিটিশন দায়ের করেছিলেন মামলাকারীরা। কিন্তু, অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে রাজ্যের বক্তব্য ঠিক কী, ৬ সপ্তাহের মধ্যে তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি মদন বি লকুর ও দীপক গুপ্তার ডিভিশন বেঞ্চ।
রাজ্যের ২৮ হাজার পুজো কমিটিকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেবে বলে ১০ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। রাজ্যের সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেই প্রথম কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত দাবি করেন, পথ নিরাপত্তা-সহ সচেতনতামূলক কাজে কলকাতা ও রাজ্য পুলিসকে সাহায্য করে পুজো কমিটিগুলি। সে জন্যই পুজো সংগঠনগুলিকে অনুদান দিচ্ছে রাজ্য সরকার। কিন্তু, মামলাকারীদের পক্ষে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, জনগণের টাকা কিছুতেই এভাবে ইচ্ছা মতো খরচ করতে পারে না সরকার। এই অনুদান দেওয়ার স্কিম সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক। রাজ্যের পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী শক্তিনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, এই অনুদান অবৈধ কি না তা বিচার করবে অডিটর ও কম্পট্রোলার জেনারেল। নির্বাচিত সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। এরপরই কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, সরকারি সিদ্ধান্তে তারা হস্তক্ষেপ করবে না। এছাড়া, জনস্বার্থ আবেদনটিকে ত্রুটিপূর্ণ বলেও উল্লেখ করে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবাশিষ করগুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ। এরপরই মামলা যায় সুপ্রিম কোর্টে।
আরও পড়ুন - পুজো অনুদান মামলার ইতিবৃত্ত
কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে বৃহস্পতিবারই দেশের শীর্ষ আদালতে মামলা নথিভুক্ত করান সৌরভ দত্ত ও আইনজীবী দ্যুতিমান ভট্টাচার্য। ওই দিনই প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর বেঞ্চে মামলিটির 'মেনশনিং' করেন আইনজীবী শুভাশিস ভৌমিক। প্রাথমিকভাবে মামলাটি পরে শুনতে চেয়েছিলেন বিচারপতি গগৈ। কিন্তু, পুজো মিটে গেলে অনুদানের উপর স্থগিতাদেশ দিয়ে কোনও লাভ হবে না বলায়, মমলাটি শুক্রবারই শোনা হবে বলে ঠিক হয়। সেই মতো এদিন মামলার শুনানিতে স্থগিতাদেশের আবেদন খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত। তবে, আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানাতে হবে সুপ্রিম কোর্টে।