এক গুরুত্বপূর্ণ রায়ে, বুধবার সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে তদন্তকারী সংস্থা কোনও অভিযুক্তকে ত্রুটিপূর্ণ জামিন থেকে বঞ্চিত করার জন্য তদন্ত শেষ না-করে আদালতে চার্জশিট পেশ করতে পারবে না। ফৌজদারি দণ্ডবিধির (সিআরপিসি) ১৬৭ ধারা অনুযায়ী, তদন্তকারী সংস্থা হেফাজতে নেওয়ার তারিখ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা দিতে ব্যর্থ হলে অভিযুক্ত ত্রুটিপূর্ণ জামিনের অধিকারী হন। নির্দিষ্ট শ্রেণিভুক্ত অপরাধের ক্ষেত্রে, সেই নির্ধারিত সময়সীমা ৯০ দিন পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে।
বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারি ও বিচারপতি সিটি রবিকুমারের বেঞ্চ এই ব্যাপারে জানিয়েছে, 'কোনও মামলার তদন্ত শেষ না-করে, তদন্তকারী সংস্থা শুধুমাত্র একজন গ্রেফতার হওয়া আসামিকে ডিফল্ট জামিনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চার্জশিট দায়ের করতে পারে না।' যদি তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ তদন্ত শেষ না-করে এই ধরনের একটি চার্জশিট দাখিল করে, তাহলে আসামী জামিনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন না।
একইসঙ্গে আদালত জানিয়েছে, 'ট্রায়াল কোর্ট এই ধরনের ক্ষেত্রে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিকে ডিফল্ট জামিন না-দিয়ে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিকে নির্ধারিত সময়ের বাইরে হেফাজতে রাখতে পারে না।' শীর্ষ আদালত মনে করছে, তদন্ত শেষ না-করেই যদি চার্জশিট দাখিল করা যায়, তাহলে তা হেফাজত দীর্ঘায়িত করার কাজে ব্যবহৃত হবে। যা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নিশ্চিত করা মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করবে।
রিতু ছাবরিয়া তাঁর স্বামীর জামিনে মুক্তি চেয়ে আবেদন দায়ের করেছিলেন। সেই মামলায় এই রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। কেন্দ্রীয় সরকার নানা আপত্তি জানিয়েছিল। যুক্তি দেখাতে চেয়েছিল। কিন্তু, আদালত সেসব গ্রাহ্য করেনি। আদালত জানিয়েছে, একথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে সংবিধান ব্যক্তি এবং সমাজের নাগরিক স্বাধীনতা রক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটি সুপ্রিম কোর্টকে অর্পণ করেছে।
আরও পড়ুন- ভারতীয় কফ সিরাপ ‘দূষিত’! সাত মাসে তৃতীয়বার সতর্কবাণী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
আদালত বুঝিয়ে দিয়েছে, নাগরিক স্বাধীনতা এক মৌলিক অধিকার। যা দেশের জনগণকে রাষ্ট্রের সঙ্গে কার্যকরভাবে আলোচনা করতে এবং জনগণ ও রাষ্ট্রের মধ্যে সামাজিক চুক্তিতে ক্ষমতার সমতা বজায় রাখার অনুমতি দিয়েছে। বেঞ্চ জানিয়েছে, 'যদি এই আদালত মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে তার এক্তিয়ার প্রয়োগ করতে অস্বীকার করে, তাহলে দেশের মানুষ একটি স্বেচ্ছাচারী এবং নিরবচ্ছিন্ন অত্যাচারের শিকার হবে।'