SC Aadhaar Verdict: আধার আইন ২০১৬, সাংবিধানিক ভাবে বৈধ বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ ৪-১ ভিত্তিতে এই রায় দিয়েছে। তবে আধার আইনের বেশ কিছু ধারা বাতিল করা হয়েছে। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, ইউনিক আইডি না থাকলে কোনও ব্যক্তিকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।
এদিনের রায়ের মূল অংশটি প্রধান বিচারপতি এবং বিচারপতি এ এম খানউইলকরের সঙ্গে সহমতের ভিত্তিতে লিখেছেন বিচারপতি এ কে সিক্রি। প্যানের সঙ্গে আধারের সংযুক্তির বিষয়টিকে লাগু রাখলেও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং মোবাইল ফোনের সঙ্গে আধারের সংযুক্তি প্রয়োজনীয় নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে আদালত। এ ব্যাপারে সহমত পোষণ করে বিচারপতি অশোক ভূষণ বলেছেন, আধার আইনের ৭ নং ধারায় যে ভর্তুকি এবং কল্যাণমূলক প্রকল্পের কথা বলা আছে তার সপক্ষে যথেষ্ট পরিমাণ যুক্তি দিয়েছে কেন্দ্র।
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, মোবাইল নম্বর, স্কুলে ভর্তির জন্য আধার কার্ড বাধ্যতামূলক নয়: সর্বোচ্চ আদালত
এ ব্যাপারে ভিন্ন মত পোষণ করেছেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়। তিনি বলেছেন সংবিধানের ১১০ নং অনুচ্ছেদ অবমাননা করার জন্য আধার আইন বাতিল করা উচিত। লোকসভায় আধার বিলকে অর্থ বিল হিসেবে পাশ করানোর প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেছেন, রাজ্যসভাকে এড়িয়ে যাওয়া ঠিক হয়নি। সমস্ত ব্যবহারকারীর যে আধার তথ্য টেলিকম সংস্থাগুলি জোগাড় করেছে, তা মুছে ফেলার কথা বলেছেন তিনি।
স্কুলে ভর্তির জন্য আধার জরুরি নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, কোনও শিশুকে আধরা কার্ড না থাকর জন্য কোনও রকম সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। বিচারপতি এ কে সিক্রি বলেছেন, সিবিএসই, নিট বা ইউজিসি আধারকে বাধ্যতামূলক করতে পারবে না।
আধার সমাজের প্রান্তিক অংশের ক্ষমতায়ন করছে এবং ওই অংশটিকে আত্মপরিচয়ের সুযোগ দিচ্ছে বলে বর্ণনা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে শীর্ষ আদালত কেন্দ্রকে বলেছে যত দ্রুত সম্ভব তথ্য রক্ষার ব্যাপারে কঠোর আইন আনতে। বিচারপতি এ কে সিক্রি আধার আইনের ৫৭ ধারাকে বাতিল করে দিয়েছেন। ওই ধারায় বেসরকারি সংস্থাও আধার তথ্য জানার অধিকারী ছিল। তিনি একই সঙ্গে বলেছেন, আধার অথেন্টিকেশনের তথ্য ৬ মাসের বেশি মজুত রাখা যাবে না।
আধারের বিরুদ্ধে আদালতে প্রথম মামলা করেছিলেন ২০১২ সালে কর্নাটক হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি কে এস পুট্টাস্বামী। তিনি বলেছিলেন, আধার গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘনকারী।
ইউপিএ সরকারের মানসসন্তান আধার বিল হিসেবে পাশ হয় ২০১৬ সালে, নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে। সরকার একে আধার আইন ২০১৬ নাম দিয়ে লোকসভা থেকে অর্থ বিল হিসেবে পাশ করিয়ে নেয়। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ যে ভাবে আধার আইন পাশ করানো হয়েছে, তা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করেন। তাঁর মামলাটিও বাকি মামলাগুলির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়।
বিচারপতি চন্দ্রচূড় তাঁর রায়ে বিচারপতি সিক্রির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, আধার বিলকে অর্থ বিল হিসেবে পাশ করানো এক ধরনের জালিয়াতি।