সমলিঙ্গ সম্পর্ককে স্বীকতি দিলেও সমলিঙ্গে বিবাহে এখনই সম্মতি দিল না সুপ্রিম কোর্ট। সম্পূর্ণটাই ছাড়া হল কেন্দ্রীয় সরকারের উপর। পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছে, আদালত এ নিয়ে আইন তৈরি করতে পারে না। কিন্তু আইনের ব্যাখ্যা দিতে পারে। অর্থাৎ সমলিঙ্গ বিবাহকে আইন করার বিষয়ে সরকারকেই এগোতে হবে।
দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের মধ্যেই এই মামলায় ভিন্নমত লক্ষ্য করা গিয়েছে। পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চের একাধিক সদস্য প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের সঙ্গে একমত নন। তাই ভিন্নমতের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, 'সমলিঙ্গে বিবাহে এখনই আইনি স্বীকৃতি নয়।' অর্থাৎ ভালোবেসে সমকামে নিজের মনের মানুষের সঙ্গে সহবাস করা গেলেও বিয়ে এখনই সম্ভব নয়। যদিও রায় ঘোষণার আগে এই বিষয়ে একাধিক তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এদিন নির্দেশ পড়ার সময় প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেছেন, 'যৌন অভিচারের নিরিখে কাউকে বিবাহের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানটি কোনও অনড়, অটল বিষয় নয়। বিবাহে বিবর্তন আসে।'
১০ দিন টানা শুনানির পর প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ গত ১১ মে রায় সংরক্ষিত রেখেছিল। এদিন যা ঘোষণা করা হল।
নির্দেশে কী কী উল্লেখ?
- প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেছেন, 'কেন্দ্রীয় সরকার, সব রাজ্যের সরকার এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির প্রশাসন যেন কোনওভাবেই ক্যুইয়ার কমিউনিটিকে তাঁদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না করেন। কোনও ক্ষেত্রেই যেন এই গোষ্ঠীকে বেআইনি হিসেবে দেখা না হয়। ক্যুইয়ার যুগলদের বেআইনি হিসেবে দেখা যাবে না।'
- 'অবিবাহিত যুগল এবং ক্যুইয়ার যুগলকে চাইলেই একটি শিশু দত্তক নিতে পারবেন।ট অর্থাৎ লিভ ইন রিলেশনে রয়েছেন এমন যুগলদের ক্ষেত্রে শিশু দত্তকের ক্ষেত্রে আর কোনও বাধা থাকবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
- 'বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানটি কোনও অনড়, অটল বিষয় নয়। বিবাহে বিবর্তন আসে। সমলিঙ্গ সম্পর্কের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য কেন্দ্র যে কমিটি গড়েছে, এ বিষয়ে সেই কমিটির অগ্রসর হওয়া উচিত।'
- 'ব্যক্তিগত স্তরে যে কোনও কাজকে আইনের ঊর্ধ্বে রাখা উচিত নয়। বিবাহ বর্তমানে যে স্বীকৃতি পেয়েছে, আইন না থাকলে তা সম্ভব হত না। সমকাম কোনও শহুরে বিষয় নয়। LGBTQA+ সম্প্রদায়ের কাউকে তাঁদের যৌন পরিচয় জানার জন্য থানায় তলব করা যাবে না। তাঁরা বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এলে তাঁদের সেখানে জোর করে ফেরানো যাবে না। এই সম্প্রদায়ের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করার আগে পুলিশকে প্রাথমিক ভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। জীবনসঙ্গী নির্বাচন করা প্রত্যেকের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।'