Delhi Pollution: দিল্লি এবং সংলগ্ন এলাকায় দূষণ রোধে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত ডেডলাইন বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট। তারপর দূষণ রোধে প্রশাসনকে সক্রিয় হতে কড়া পদক্ষেপ নেবে শীর্ষ আদালত। এভাবেই কেন্দ্র এবং দিল্লি সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। বুধবার শুনানিতে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা প্রশ্ন করেন, ‘আমরা কি ২১ নভেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারি। এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট পূর্বাভাস দিয়েছে আগামি দু-তিন দিনের মধ্যে হাওয়ার গতি বদলাবে। ততদিনে কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হবে দূষণ পরিস্থিতি।‘
সেই সওয়ালের পরেই ২১ নভেম্বর পর্যন্ত ডেডলাইন বেঁধে দেয় শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি দিল্লি সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, ‘এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করতে। তাদের বেঁধে দেওয়া বিধি কার্যকর করে বায়ু দূষণকে নিয়ন্ত্রণে আনতে।‘ এদিনের শুনানিতে টিভির বিতর্কসভার প্রতি উষ্মা প্রকাশ করে শীর্ষ আদালত। বেঞ্চের মন্তব্য, ‘টিভির বিতর্কসভা থেকে বেশি দূষণ ছড়ায়। যারা অংশ নিয়ে থাকেন, প্রত্যেকের নিজস্ব মতামত থাকে। আশপাশের কোনও খবর না রেখেই বিতর্কে বসে পড়েন। আর বিষয় বহির্ভূত মন্তব্য পেশ করেন। যদিও এব্যাপারে আমাদের কিছু করনীয় নেই, তাই যেখানে নিয়ন্ত্রণ করার সেদিকেই আমরা নজর রাখছি।‘
এদিকে, ভয়াবহ পরিস্থিতি দূষণের জেরে। বাতাসে বিষের কারণে পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত দিল্লি-এনসিআর এলাকায় বন্ধ থাকবে সমস্ত স্কুল-কলেজ-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পড়াশোনা হবে ফের অনলাইনে। সরকারি অফিস-কাছারিতে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ হবে। বাকিদের বাড়ি থেকে কাজ করতে হবে। মঙ্গলবার রাতে এমনই নির্দেশিকা জারি করল ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিওনের (এনসিআর) কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি দিল্লির দূষণ পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। দূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে দুদিনের লকডাউন করার সুপারিশ করে শীর্ষ আদালত। দূষণ পরিস্থিতি নিয়ে দিল্লি সরকার সুপ্রিম কোর্টে জানায়, দূষণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সম্পূর্ণ লকডাউনের পথেও যেতে পারে সরকার। রাজধানী-সহ এনসিআর এলাকায় লকডাউন জারি করার ভাবনার কথা আদালতে জানায় কেজরিওয়াল সরকার। তারপরেই দূষণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট এই নির্দেশিকা জারি করেছে।
নির্দেশিকা একনজরে-
- দিল্লির ৩০০ কিমির মধ্যে চালু থাকবে মাত্র পাঁচটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
- ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাকি ৬টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ রাখার নির্দেশ।
- ২১ নভেম্বর পর্যন্ত সবরকম নির্মাণ কাজ, ভাঙার কাজ বন্ধ রাখতে হবে।
- রবিবার পর্যন্ত অত্যাবশ্যকীয় পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়া অন্য মালবাহী গাড়ির প্রবেশ নিষেধ দিল্লিতে।
- ২১ নভেম্বর পর্যন্ত দিল্লির পড়শি রাজ্য হরিয়ানা, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ এবং পাঞ্জাবে অফিস-কাছারিগুলিতে ৫০ শতাংশ কর্মীকে বাড়ি থেকে কাজ করার পরামর্শ।
উল্লেখ্য, গত শনিবার মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানান, এক সপ্তাহের জন্য় স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি সরকার। এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকবে স্কুল। অফিস-কাছারিও বন্ধ থাকছে। বাড়ি থেকেই কাজ করতে হবে কর্মীদের। সেইসঙ্গে আগামী চারদিন বন্ধ থাকবে নির্মাণ শিল্পের কাজকর্ম। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হচ্ছে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন