আজই সুপ্রিম কোর্টে শপথ নেবেন ৫ জন নতুন বিচারপতি, বিচারপতির সংখ্যা বেড়ে হবে ৩২, কমবে কাজের চাপও। গত বছর ১৩ ই ডিসেম্বর, সুপ্রিম কোর্টের ছয় সদস্যের কলেজিয়াম এই পাঁচ বিচারপতির নাম সুপারিশ করেছিলেন। কলেজিয়াম আরও দুই বিচারপতির নাম সুপারিশ করেছে্ন। তাতে কেন্দ্রের তরফে সিলমোহর দেওয়া হলে সুপ্রিম কোর্টে ৩৪ জন বিচারপতি নিয়ে পূর্ণ ক্ষমতায় কাজ করবে।
সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়ামের সুপারিশ মেনেই পাঁচ বিচারপতির নাম অনুমোদন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিচারপতিদের নিয়োগের সুপারিশ রাষ্ট্রপতি ভবনে পাঠিয়ে দেওয়া হলে মেলে অনুমোদ্নও। সোমবারই নতুন পাঁচ বিচারপতির শপথ গ্রহণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। পাঁচ নতুন বিচারপতি হলেন - রাজস্থান হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি পঙ্কজ মিঠাল, পাটনা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জয় করোল, মণিপুর হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি পিভি সঞ্জয় কুমার, পাটনা হাইকোর্টের বিচারপতি আসাউদ্দিন আমানুল্লাহ ও এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি মনোজ মিশ্র।
ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় তার নতুন ভবন কমপ্লেক্সে সুপ্রিম কোর্টের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত একটি অনুষ্ঠানে পাঁচ বিচারপতিকে শপথ পাঠ করাবেন। সকাল সাড়ে ১০ টায় হবে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু টুইট করে এ কথা জানিয়েছেন।
কিরেন টুইটে লিখেছেন, রাজস্থান হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি পঙ্কজ মিঠাল, পটনা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জয় কারোল, মণিপুর হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি পিভি সঞ্জয় কুমার, পটনা হাই কোর্টের বিচারপতি আহসানুদ্দিন আমানুল্লাহ এবং ইলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি মনোজ মিশ্রকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ করা হল।
সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম মাত্র কিছুদিন আগেই বিচারপতি পদে নতুন করে আরও দু’জনের নাম সুপারিশ করেছিল। এটা একটা ব্যতিক্রম। কারণ, সাধারণত যতক্ষণ না আগের সুপারিশ কার্যকর হয়, সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম নতুন কোনও সুপারিশ করে না। কিন্তু, সেই নিয়ম সরিয়ে রেখে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম গত ৩১ জানুয়ারি, শীর্ষ আদালতের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের জন্য এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল এবং গুজরাট হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরবিন্দ কুমারের নাম সুপারিশ করেছিল। আর, তারপরই কলেজিয়ামের নিয়োগের সুপারিশে ছাড়পত্র দিল মোদী সরকার।
বিচারপতি পঙ্কজ মিঠাল: এলাহাবাদ হাইকোর্টে আইনজীবী হিসাবে প্র্যাকটিস শুরু করেন। ১৯৬১ সালের ১৭ জুন জন্মগ্রহণ করেন বিচারপতি পঙ্কজ মিঠাল, আদতে মিরাটের বাসিন্দা। ১৯৮২ সালে এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যে স্নাতক সম্পুর্ণ করার পর, তিনি ১৯৮৫ সালে মিরাট কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। একই বছর, উত্তরপ্রদেশ বার কাউন্সিলের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। পরে, তিনি এলাহাবাদ হাইকোর্টেও অনুশীলন শুরু করেন।
বিচারপতি করোল: সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হওয়ার সময় তিনি পাটনা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন। হিমাচল প্রদেশে ২৩শে আগস্ট ১৯৬১, তাঁর জন্ম। বিচারপতি করোল সিমলার সেন্ট এডওয়ার্ড স্কুল এবং সিমলার সরকারি ডিগ্রি কলেজে থেকে পড়াশুনা সম্পুর্ণ করেন।
বিচারপতি সঞ্জয় কুমার: ১৯৮৮ সালে অন্ধ্র প্রদেশ হাইকোর্টে আইনি অনুশীলন শুরু করেন।১৪ই আগস্ট, ১৯৬৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বিচারপতি কুমার হায়দ্রাবাদের নিজাম কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পর ১৯৮৮ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপরই তিনি অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টে প্র্যাকটিস শুরু করেন। ২০০৮ সালে, তিনি অন্ধ্র প্রদেশ হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হন।
বিচারপতি এ আমানুল্লাহ: ১১ মে, ১৯৬৩ সালে জন্মগহণ করেন বিচারপতি এ আমানুল্লাহ। বিহার স্টেট বার কাউন্সিলে নাম নথিভুক্ত করার পর১৯৯১ সালে পাটনা হাইকোর্টে অনুশীলন শুরু করেন। ২০শে জুন, ২০১১-এ পাটনা হাইকোর্টের বিচারপতি পদে উন্নীত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি একই হাইকোর্টে সরকারী প্লিডার ছিলেন। ১০ অক্টোবর, ২০২১-এ, তাকে অন্ধ্র প্রদেশ হাইকোর্টে বদলি করা হয়।
বিচারপতি মনোজ মিশ্র: সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া পাঁচ বিচারপতির মধ্যে জ্যেষ্ঠতার বিচারে বিচারপতি মনোজ মিশ্র পঞ্চম স্থানে রয়েছেন। ২শে জুন, ১৯৬৫ সালে জন্ম নেওয়া বিচারপতি মিশ্র ১৯৮৮ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্র্টে তার আইনি অনুশীলন শুরু করেন। ২১ নভেম্বর ২০১১-এ, তাকে এলাহাবাদ হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ করা হয়। তিনি ৬ আগস্ট, ২০১৩ এ স্থায়ী বিচারপতি হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।