আর্থিক তছরুপ মামলায় যুগান্তকারী রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার শীর্ষ আদালত জানাল, অর্থ তছরুপ মামলায় গ্রেফতার করতে পারবে ইডি। আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ বা পিএমএলএ, ২০০২ আইনে ইডির তল্লাশি, গ্রেফতার এবং সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অধিকার কি রয়েছে? এই আইনে ইডির ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল।
বুধবার সেই সব মামলার রায় দিলেন বিচারপতি এএম খানউইলকর। খারিজ করে দিলেন ইডির বিরুদ্ধে করা বেশিরভাগ মামলা। একইসঙ্গে আদালত জানিয়েছে, আইনের অধীনে অর্জন করতে চাওয়া বস্তুর সঙ্গে ইডির এই তল্লাশি, গ্রেফতার এবং সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার একটি যুক্তিসঙ্গত সম্পর্ক রয়েছে।।
মামলাকারীদের অভিযোগ ছিল, বিরোধীদের নিশানা করতেই মোদী সরকার ইডির মত কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোকে কাজে লাগাচ্ছে। মঙ্গলবারই অর্থ মন্ত্রকের তথ্য দেখিয়েছে, মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে ইডি ন'বছরে মোট ১১২টি তল্লাশি চালিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর গত আট বছরে ৩,০১০টি তল্লাশি চালিয়েছে। অর্থ মন্ত্রকের এক্ষেত্রে যুক্তি, নয়ছয় আটকানোর প্রতি মোদী সরকারের দায়বদ্ধতা রয়েছে। আর, সেই কারণেই তল্লাশি বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে আদালতে মামলকারীরা অভিযোগ করেছেন, বহু ক্ষেত্রেই কারণ না-দেখিয়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে। যা অসাংবিধানিক। বুধবার সেই সব আবেদন বিচারপতি খারিজ করে দেন। আদালতের এক্ষেত্রে পালটা বক্তব্য, এনফোর্সমেন্ট কেস ইনফরমেশন রিপোর্ট (ইসিআইআর), ইডির অভ্যন্তরীণ নথি। প্রাথমিক তথ্য প্রতিবেদনের (এফআইআর) সঙ্গে তা সমান নয়। সেই কারণে, পিএমএলএর অধীনে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অভিযুক্তকে ইসিআইআর সরবরাহ করা মোটেও বাধ্যতামূলক নয়।
আরও পড়ুন- মুসলিমদের ওপর কিন্তু পাপড়ি বর্ষণ হয়নি, বুলডোজার বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে, কটাক্ষ ওয়াইসির
কারণ, আইনের ৪৫ নম্বর ধারায় দুটি শর্তে জামিন পাওয়া যায়। প্রথম শর্ত হল, সরকারি আইনজীবী একজন অভিযুক্তের জামিনের বিরোধিতা করার পরও আদালত কেবল তখনই জামিন মঞ্জুর করে, যখন দেখে যে অভিযুক্ত এই ধরনের অপরাধের জন্য দোষী নন। অথবা, তিনি এমন অপরাধের জন্য দায়ী নন বলে বিশ্বাস করার যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে। আর দ্বিতীয় শর্ত হল, অভিযুক্ত জামিনে মুক্তি পেলেও কোনও অপরাধ করবেন না, এই ব্যাপারে যখন আদালত নিশ্চিত হয়।
আবেদনে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২০ (৩)- এর অধীনে অপরাধের বিরুদ্ধে আইনের ৫০ নম্বর ধারায় ইডি অফিসারদের বিবৃতি রেকর্ড করার বৈধতাকেও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। বেঞ্চ এক্ষেত্রে জানিয়েছে যে ইডি অফিসাররা পুলিশ আধিকারিক নন। তাই ২০ (৩) ধারা তাঁদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। আবেদনকারীরা জানিয়েছিলেন, পিএমএলএর ৩ নম্বর ধারার অধীনে অর্থপাচার রুখতে মামলা দায়ের করা যায় না। সেই আবেদনও আদালত খারিজ করে দিয়েছে।
Read full story in English