সোমবার দুপুরে দুটি পৃথক ঘটনায় বাড়ি ফেরার দাবি জানিয়ে গুজরাটের সুরাট জেলার ভারেলি গ্রামে এবং সুরাট শহরের পালনপুর এলাকায় পথে নামেন হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক।
ভরেলিতে মূলত উত্তরপ্রদেশ এবং বিহার থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিক, যাঁরা কাদোদারা গুজরাট ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের কাপড় রঙ করা ও ছাপার কারখানা, এবং যান্ত্রিক তাঁত কারখানায় কাজ করছিলেন, স্লোগান তুলে পথে নামেন তাঁদের নিজেদের রাজ্যে ফিরে যাওয়ার দাবিতে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সেসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন স্রেফ পাঁচজন পুলিশকর্মী, যাঁরা লাউডস্পিকারের সাহায্যে শ্রমিকদের পিছু হটতে বলেন, কিন্তু তাঁদের ওপর পাথর বৃষ্টি হতে থাকে। পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এর ফলে জখম হন দুজন পুলিশকর্মী, এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশ কিছু গাড়ি। এরপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ, ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও। ঘটনায় অন্তত ১০০ জনকে আটক করা হয়েছে, এবং অভিযোগ দায়ের হয়েছে পালসানা থানায়।
সূত্রের খবর, তিনটি পুলিশের গাড়ি এবং তিনটি প্রাইভেট গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পুলিশের ডেপুটি সুপারিন্টেনডেন্ট ভার্গব পান্ডিয়া বলেন, "পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাঁরা এগিয়ে আসছেন বুঝতে পেরে আমরা তাঁদের শান্ত করার চেষ্টা করি। এই পরিযায়ী শ্রমিকরা বিহার এবং ইউপি-র বাসিন্দা। আমরা তাঁদের নেতাদের বলি তাঁরা যেন বোঝান যে তাঁদের নিজেদের রাজ্যে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে। তবে ক্ষিপ্ত জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা তখন লাঠিচার্জ করি এবং কাঁদানে গ্যাস ছুড়ি। আহত পুলিশকর্মীরা এখন ভালো আছেন।"
প্রায় একই সময় সুরাট শহরের পালনপুর এলাকায় প্রায় ৫০০ জন পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ি ফেরার দাবি নিয়ে পথে নামেন। তাঁদের প্রধান অভিযোগ, তাঁদের কাছ থেকে বাড়িভাড়া চাইছেন বাড়িওয়ালারা। পালনপুরে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী পাঠিয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করা হয়, এবং তাঁদের নিজেদের কোয়ার্টারে ফিরে যেতে রাজি করান পুলিশের ডেপুটি কমিশনার প্রশান্ত সুম্বে।
পরে সুম্বে বলেন, "কথাবার্তা চলাকালীন আমরা বুঝতে পারছিলাম, ওঁরা স্রেফ বাড়ি ফিরে যেতে চান। আমরা ওঁদের বলেছি যে বিষয়টি আমাদের মাথায় রয়েছে, এবং আমরা কতটা কী করতে পারি দেখব। আমরা তাঁদের আশ্বাস দিয়েছি যে যেসব বাড়িওয়ালা ভাড়া চাইছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হবে। তাতেই আশ্বস্ত হন তাঁরা, এবং আমাদের কোনোরকম বলপ্রয়োগ করতে হয় নি। আমরা গোটা এলাকাতেই টহল দিচ্ছি।"
এই ঘটনায় মহামারী আইনের আওতায় পুলিশ কমিশনারের বিজ্ঞপ্তি লঙ্ঘন করার অপরাধে ২০ জনকে আটক করা হয়, এবং অন্তত ১০০ জনের নামে আদাজান থানায় অভিযোগ দায়ের হয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন