গত জুন মাসে ঝাড়খণ্ডে গণপ্রহারে নিহত তবরেজ আনসারির হত্যার অপরাধে গ্রেফতার করা হয় ১১ জনকে। কিন্তু, ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ বাতিল করল ঝাড়খণ্ড পুলিশ। ঝাড়খণ্ডের সেরাইকেলা-খারসাওয়ান জেলার ধাতকিডি গ্রামে চোর সন্দেহে গণপিটুনির মুখে পড়েন তবরেজ। গুরুতর জখম হন ২২ বছরের যুবক। তাঁকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর চারদিন পর মৃত্যু হয় তাবরেজ আনসারির।
চূড়ান্ত ময়না তদন্তের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, তাবরেজ "কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট" -এর কারণে মারা যান, এবং এটি কোনও পূর্ব-পরিকল্পিত হত্যার মামলা নয়। গতমাসেই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় (শাস্তিযোগ্য নরহত্যা যা খুন নয়) চার্জশিট নথিভুক্ত করে পুলিশ। যেখানে বলা হয়, এই ঘটনা হত্যার সমতুল নয়। এর আগে নিহত আনসারির স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে ১১ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ এনেছিল পুলিশ।
আরও পড়ুন: কলকাতা পুলিশে ফিরলেন দময়ন্তী, রাজ্য পুলিশ পেল নতুন টাস্ক ফোর্স
সেরাইকেলা-খারসাওয়ানের পুলিশ সুপার কার্তিক এস ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান, "প্রথমত, ঘটনাস্থলেই আনসারির মৃত্যু হয়নি, এবং তাঁকে মারার কোনও উদ্দেশ্য স্থানীয়দের ছিল না। দ্বিতীয়ত, মেডিক্যাল রিপোর্টেও খুনের যথার্থ প্রমাণ মেলে নি। এছাড়া, চূড়ান্ত ময়না তদন্তে বলা হয়েছে যে, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট ও মাথায় রক্তক্ষরণের জেরে মৃত্যু হয়েছে তাবরেজ আনসারির।"
ঘটনার সূত্রপাত হয় ১৮ জুন, যেদিন ধাতকিডি গ্রামের কিছু বাসিন্দা একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারেন আনসারিকে, এবং তাঁকে "জয় শ্রীরাম" ও "জয় হনুমান" বলতে বাধ্য করা হয় বলে খবরে প্রকাশ। এই ঘটনার পর আনসারিকে চুরির দায়ে গ্রেফতার করে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়, কিন্তু গণপ্রহারে পাওয়া আঘাতের কারণে চারদিন পর হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।
আরও পড়ুন: ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রেফতার হবেন, ৮ কোটি টাকা চুরির দায়ে’, বিস্ফোরক মুকুল রায়
২৩ জুন ধাতকিডি গ্রামের ১১ জন বাসিন্দাকে গ্রেফতার করে পুলিশ, এবং বরখাস্ত হন দুজন পুলিশকর্মী। গ্রামবাসী এবং গ্রেফতার হওয়া ১১ জনের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানতে পারে, অভিযুক্তদের মধ্যে মাত্র পাঁচজন ক্লাস টেনের গণ্ডি পেরিয়েছেন, এবং অধিকাংশই হয় দিনমজুর বা বেকারত্ব ঘোচাতে চাকরির সন্ধানে করছেন। এরপরই পুলিশ, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুন, এবং ধর্মীয় কারণে ইচ্ছাকৃত শারীরিক আঘাত ঘটানোর অভিযোগে মামলা দায়ের করে।
Read the full story in English