নাগরিকত্ব আইন ঘিরে উত্তাল দেশ। দিকে দিকে চলছে বিক্ষোভ। বিরোধীদের অভিযোগ, মোদী সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতার জেরে সংবিধান বিপন্ন করে 'হিন্দু রাষ্ট্র' গঠনের পথে সচেষ্ট। এই বিতর্কেই মাঝেই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। সংসদীয় গণতন্ত্রে সংখ্যাধিক্যের প্রতাপকে বিঁধে তিনি বলেন, 'নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে কেউ স্থায়ী সরকার গড়তে পারে ঠিকই। কিন্তু তার মানেই সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মত তার পক্ষে রয়েছে- এমন নয়, তাই তা সংখ্যাগরিষ্ঠের সরকার নয়। এটাই আমাদের সংসদীয় গণতন্ত্রের সার কথা।'
আরও পড়ুন: জামিয়া মিলিয়ার ছায়া দেশজুড়ে, প্রতিবাদে সামিল একের পর এক ক্যাম্পাস
সোমবার ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন আয়োজিত দ্বিতীয় অটল অটল বিহারী বাজপেয়ী স্মারক বক্তৃতায় বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। সেখানেই তিনি বলেন, 'কোনও একটি দলের বা জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেই তা জনপ্রিয় সরকার বলে বিচিত হয় না। দেশে সুশাসনের লক্ষ্যে ভিন্ন মতকেও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। তা না হলে সরকারের টিঁকে থাকা কষ্টসাধ্য।' তিনি বলেন, 'যতবার দেশের সরকার এই সার সত্য মেনে চলেনি, ততবারই দেশের মানুষ তাদের শাস্তি দিয়েছে। তাঁর কথায়, দুর্ভাগ্য যে রাজনীতিকদের অনেকেই শিক্ষা নেননি। তাঁরা মনে করেন, মানুষ যখন তাঁদের সরকার গড়ার অধিকার দিয়েছে, তখন তাঁরা যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। কিন্তু তা হতে পারে না।'
আরও পড়ুন: দেশকে সহিংসতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে মোদী সরকার, সুর চড়ালেন সোনিয়া, প্রিয়াঙ্কা
প্রণববাবুর কথায়, প্রথম সাধারণ নির্বাচন থেকেই কোনও দল বা জোট সরকার গড়ার সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও শতাংশের বিচারে, ৫০ শতাংশ ভোট হাসিল করতে পারেনি। তাই শাসক দলকে বিরোধীদের কথাও মনে রাখতে হবে। তাদের মতামতকে বিবেচনা করে প্রশাসন চালাতে হবে। পাশাপাশি লোকসভা ও রাজ্যসভায় আসন বৃদ্ধির পক্ষেও সওয়াল করেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের জনগণনা অনুশারে ১৯৭৭ সালে লোকসভায় শেষ আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছিল। তাঁর মতে এক জন সাংসদ গড়ে প্রায় ১৬-১৮ লক্ষ মানুষের দায়িত্বে থাকেন। ফলে অসুবিধার সৃষ্টি হয়। এবার তাই ভেবে দেখার সময় এসেছে।
Read the full story in English