এমএসপি এবং অন্যান্য দাবির নিয়ে একাধিক কৃষক সংগঠন প্রতিবাদে সামিল রয়েছে। 'দিল্লি চলো'র ডাক দিয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলনে সামিল কৃষকদের বিক্ষোভ আজ ষষ্ঠ দিনেও অব্যাহত রয়েছে। পাঞ্জাব-হরিয়ানা সীমান্তে আন্দোলনরত কৃষকদের থামাতে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল সংখ্যক পুলিশ। এদিকে আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে আজ রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ফের বৈঠকে বসতে চলেছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদিল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিদের মধ্যে চতুর্থ দফার আলোচনা হবে আজ। প্রথম তিন দফা বৈঠকে সেভাবে মেলেনি কোন সমাধান সূত্র।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এবং স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই আজ (১৮ ফেব্রুয়ারি) আবারও কৃষকদের সঙ্গে বৈঠককে বসবেন। চতুর্থ দফা বৈঠকটি সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হবে। চণ্ডীগড়ের পাঞ্জাব সরকারের মহাত্মা গান্ধী স্টেট ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে অনুষ্ঠিত হবে আজকের বৈঠক।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এবং স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলবেন। অন্যদিকে এই বৈঠকে কৃষকদের পক্ষে, কিষাণ মজদুরের সাধারণ সম্পাদক সারওয়ান সিং পান্ধের, সংগ্রাম কমিটি, ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন (সিধুপুর) কে জগজিৎ সিং ডাল্লেওয়াল ছাড়াও আরও অনেক কৃষক নেতা উপস্থিত থাকবেন।
এর র আগে, ১৫ ফেব্রুয়ারি চণ্ডীগড়ে তৃতীয় দফা আলোচনা হয়েছিল। তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এবং স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান।
কৃষকদের দাবি কী?
-কৃষকদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবি হল সমস্ত ফসল কেনার ক্ষেত্রে তাদের এমএসপির গ্যারান্টি । এ জন্য আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন কৃষক সংগঠনগুলি।
-ডঃ স্বামীনাথন কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী ফসলের দাম নির্ধারণ করতে হবে।
-কৃষক ও খেতমজুরদের ঋণ মুকুবের দাবি জানানো হয়েছে।
-৬০ বছরের বেশি বয়সী কৃষকদের ১০ টাকা পেনশনের দাবিও জানানো হয়েছে।
-ভূমি অধিগ্রহণ আইন ২০১৩ আবার কার্যকর করতে হবে।
-লখিমপুর খেরি ঘটনার দোষীদের শাস্তি হওয়া উচিত। আসামিদের জামিন বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে কৃষক সংগঠনের তরফে।
-মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিষিদ্ধ করার দাবি।
-বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল ২০২০ বাতিল।
-MNREGA-এর অধীনে, প্রতি বছর ২০০ দিনের কাজের গ্যারান্টি এবং ৭০০ টাকা ন্যুনতম মজুরির দাবি।
-কৃষক আন্দোলনে নিহত কৃষকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও সরকারি চাকরি দিতে হবে। চুক্তি অনুযায়ী আহতদের ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। দিল্লি মোর্চা সহ সারা দেশে সমস্ত আন্দোলনের সময় দায়ের করা সমস্ত মামলা বাতিলের দাবিও জানানো হয়েছে।
-নকল বীজ, কীটনাশক ও সার বিক্রিকারী কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর আইন আনতে হবে। ফসল বিমার দাবি।
-মরিচ, হলুদ ও অন্যান্য মসলার জন্য একটি জাতীয় কমিশন গঠন করতে হবে।
-সংবিধানের পঞ্চম তফসিল বাস্তবায়ন করে আদিবাসীদের জমি লুটপাট বন্ধ করতে হবে।
এখন পর্যন্ত আলোচনায় কেন্দ্রীয় সরকার কৃষকদের ১০টি দাবি মেনে নিতে রাজি হলেও তিনটি দাবিতেই আলোচনা আটকে আছে। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকার MSP অর্থাৎ ন্যূনতম সমর্থন মূল্য গ্যারান্টি আইন, কৃষকদের ঋণ মকুব এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সী কৃষকদের পেনশনের দাবিতে আগ্রহ দেখায় নি। কৃষক নেতারা এখন এমএসপি নিয়ে আইন আনার দাবিতে অনড়।