বিজেপি নেত্রীর একটি মন্তব্য! তাতেই বিদেশের মাটিতেও কার্যত হাজারো প্রশ্নের সামনে পড়তে হচ্ছে ভারত সরকারকে। ইসলাম ধর্মকে অবমাননার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি নেত্রীর নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে। যা নিয়ে একের পর এক দেশের তরফে কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। বিশেষ করে আরব উপমহাদেশের একাধিক দেশের তরফে ওই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করা হয়েছে।
দিকে দিকে প্রতিবাদ এবং প্রতিবাদের নামে যে তাণ্ডব চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ তার বিরুদ্ধে এবার গর্জে উঠেছেন বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন। প্রতিবাদের নামে যে হিংসাত্মক বিক্ষোভ চলছে তার তীব্র প্রতিবাদ করে তিনি এক টুইট বার্তায় লিখেছেন “আজকে যদি নবী মহম্মদ বেঁচে থাকতেন, তাহলে সারা বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়ের এই বিক্ষোভ দেখে হতবাক হয়ে যেতেন।"
নূপুর শর্মার মন্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তাল একাধিক রাজ্য। দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ড সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীরা বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মার গ্রেফতারের দাবি জানানর পাশাপাশি তার মৃত্যুদণ্ডের জন্যও সোচ্চার হয়েছেন।
বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবেশী বাংলাদেশেও। শুক্রবার, হাজার হাজার মানুষ নবী মহম্মদকে নিয়ে নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিলে সামিল হন। বিক্ষোভকারীরা ভারত সরকার তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি আগামী ১৬ জুন ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও অভিযানেরও ডাক দেন। একই সঙ্গে ভারতীয় পণ্য বয়কটেরও আহ্বান জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: নজরে আইন-শৃঙ্খলা: তাণ্ডব রুখতে হাওড়াজুড়ে একঝাঁক IPS নিয়োগ
নূপুর শর্মা এবং নবীন জিন্দালের মন্তব্য উপসাগরীয় দেশগুলি ভালোভাবে নেয়নি। মুখ পুড়েছে ভারতের। এই সমালোচনার কয়েকদিন পরেই দেশজুড়ে প্রতিবাদ আন্দোলনে নামে মানুষ। দিল্লি জানিয়েছে, ‘কয়েকজন ব্যক্তির মত সরকারের মতামতকে প্রতিফলিত করে না।’ এরপরই বিজেপি শর্মা ও জিন্দালকে বরখাস্ত করে।
বিতর্কিত এই মন্তব্যের জের পড়ল দেশজুড়ে। ঝাড়খণ্ডের রাঁচিতে এক ব্যক্তির বুলেটের আঘাতে মৃত্যু হয়েছে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুঁড়তে থাকা জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে শূন্যে গুলি চালানো হয়। তখনই ওই ব্যক্তির শরীরে বুলেটের আঘাত লাগে।
উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ, পশ্চিমবঙ্গের হাওড়াতেও ব্যাপক বিক্ষোভ, হিংসার ঘটনা ঘটেছে। দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, গুজরাট, বিহার এবং মহারাষ্ট্রের বেশকিছু অংশে বিক্ষোভ হয়েছে। তবে তা শান্তিপূর্ণ ছিল। শ্রীনগরে হরতাল পালন করা হয়।ইরান, কাতার থেকে বাহরিন, সৌদি আরব- মুসলিম বিশ্বের একাধিক দেশ এই মন্তব্যের কড়া প্রতিবাদ করেছে। ভারতের সঙ্গে এই দেশগুলির ভাল সম্পর্ক রয়েছে। বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে পড়শি দেশ বাংলাদেশেও বিক্ষোভ অব্যাহত।