/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/05/gyanvapi-mosque-taslima-nasreen.jpg)
বিতর্কিত জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে টুইট করলেন তসলিমা নাসরিন।
কাশীর বিতর্কিত জ্ঞানবাপী মসজিদ থেকে উদ্ধার হয়েছে ‘শিবলিঙ্গ’। তুঙ্গে বিতর্ক। এরমধ্যেই মসজিদের অন্দরের দু’টি গম্বুজ, ভূগর্ভস্থ অংশ, পুকুর-সহ সব জায়গার পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে সমীক্ষা এবং ভিডিয়োগ্রাফি করে সোমবার বারাণসীর আদালতে রিপোর্ট পেশ করে সমীক্ষক দল। তার পরেই আদালতের নির্দেশে ভূগর্ভস্থ ঘর বা তহখানা, ওজুখানা এবং আশপাশের এলাকা সিল করে দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। গনগনে এই বিতর্কের মধ্যেই ঘি ঢালল লেখিকা তসলিমা নাসরিনের টুইট।
তসলিমা সাফ জানিয়েছেন যে, সবধর্মের প্রার্থনাস্থল হোক জ্ঞানবাপী মসজিদ। টুইটে এই বিতর্কিত লেখিকার দাবি, 'সকলের জন্য একটি বড় প্রার্থনাস্থল থাকা ভালো। প্রার্থনা গৃহে থাকবে ১০টি কক্ষ, হিন্দুদের জন্য ১টি (সকল বর্ণ), ১টি মুসলিম (সকল সম্প্রদায়), ১টি খ্রিস্টান (সকল সম্প্রদায়), ১টি বৌদ্ধ, ১টি শিখ, ১টি ইহুদি, ১টি জৈনদের জন্য, ১টি পার্সিদের জন্য। লাইব্রেরি, উঠোন, বারান্দা, শৌচালয়, খেলার ঘর থাকবে সকলের জন্য।'
Better to have 1 big prayer house for all. There shld be 10rooms in the prayer house,1 room for Hindus(all castes),1 for Muslims(all sects),1 for Christians(all sects),1 for Buddhists,1 for Sikhs,1 for Jews,1 for Jains,1 for Parsi.Library,courtyard,balcony,toilet,playroom common.
— taslima nasreen (@taslimanasreen) May 16, 2022
লেখিকার টুইট ঘিরে প্রতিক্রিয়ার বন্যা। জবাবে এক ইউজার লিখেছেন, 'হিন্দুদের কাছে মন্দির হল প্রার্থনার ঘরের চেয়েও বেশি কিছু। এটি বাড়ি থেকে দূরে আরেকটি বাড়ি। তাঁরা প্রার্থনা করে, নাচ করে, গান করে, খায়, কথা বলে, রান্না করে, ধ্যান করে, শিশুরা খেলা করে, বড়রা মন্দিরের পুকুরে স্নান করে, আঁকে, সাজায়। কোনও কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ নেই। যে কেউ উপরের যে কোনটি করতে পারেন। একটি প্রার্থনা হল সেক্ষেত্রে কার্যকরী হবে না।'
আরেক ইউজার লিখেছেন, 'ম্যাম সম্মান সহ জানাচ্ছি, এই ধরনের কৃত্রিম, ছিন্নভিন্ন ধর্মগৃহ পৃথিবীর কোথাও কাজ করেনি। একটি দৃঢ় চুক্তির সঙ্গে বিভিন্ন সম্প্রদায়কে পৃথক ব্যক্তিগত স্থান প্রদান করাই ভাল। এতে প্রত্যেকে অন্যের ব্যক্তিগত স্থানকে সম্মান করবে এবং তাদের গোপনীয়তার অধিকারকে আক্রমণ করবে না।'
বিজ্ঞাপন'
আরেকটি টুইটে বলা হয়েছে, 'না ধন্যবাদ। এটা পাকিস্তান ও বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা উচিত! আপনার সমাধান সূত্র ছাড়া ভারতীয়রা ভালই আছে! ভারতে বসে আপনি এই ধরণের বিনামূল্যে পরামর্শ দিতে পারেন, অনুগ্রহ করে বাংলাদেশে বা পাকিস্তানে একই পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করুন। ভোট ব্যাঙ্ক এবং রাজনীতির জন্য হিন্দুস্থানকে ধর্মনিরপেক্ষ করে তুলেছিলেন নেহরু।'
লেখকাকে জবাব দেওয়ার সময় অনেকেই "#জ্ঞানবাপি মসজিদ" ব্যবহার করেছেন।
দীর্ঘদিন ধরেই কাশীর এই মসজিদ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর অভিযোগ, এই মসজিদ আগে হিন্দু মন্দির ছিল। পরে, তা ভেঙে মসজিদ করা হয়। সেই বিতর্ককে মাথায় রেখেই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো বহু বছর আগে থেকেই স্লোগান তুলছে, ‘অযোধ্যা পে ঝাঁকি হ্যায়, কাশী-মথুরা বাকি হ্যায়।’ এবার কার্যত হিন্দুত্ববাদীদের নৌকোর পালেই জোয়ার লাগল। জ্ঞানবাপী মসজিদে মিলল ‘শিবলিঙ্গ’। আর, যেখানে ‘শিবলিঙ্গ’ পাওয়া গিয়েছে, সেখানে পুজো করতে চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন কয়েকজন মহিলা। তার প্রেক্ষিতে আদালত নির্দেশ দিয়েছে, যেখানে ‘শিবলিঙ্গ’ পাওয়া গিয়েছে, সেই জায়গাটা অবিলম্বে সিল করে দিতে হবে। আর, ওই সিল করা জায়গায় কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না। এর আগে বৃহস্পতিবার আদালত বর্তমান কাঠামো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ও জ্ঞানবাপী মসজিদ কমপ্লেক্স চত্বরের ভিডিওগ্রাফি করার নির্দেশ দিয়েছিল।