'বড়া পাও', সিঙ্গারা ভাজতে ব্যস্ত জেলের বন্দীরা। নতুন ভাবে জীবনের স্বাদবদলে অভিনব উদ্যোগ মহারাষ্ট্রের কারা বিভাগের। রাজ্যের কারাবিভাগ রাজ্য জুড়ে কারাগারগুলিতে ক্যান্টিন খোলার পরিকল্পনা করেছে। এই ভাবনার মধ্যে ইয়েরওয়াদা কারাগারের খুলেছে প্রথম ক্যান্টিন। জেলবন্দী কয়েদিদের নতুন আগামী গড়ে তোলার লক্ষ্যে এমন ভাবনাকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্যের মানুষ।
পরিবারের এক সদস্যকে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন বছর ৪৭-এর এক কয়েদি। গতকাল সারাটা দিন রেস্তোরাঁয় কাজ করতে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। সহ কয়েদিকে নির্দেশ দিচ্ছেন কীভাবে সিঙ্গারা ভাজতে হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১৫ জনের মধ্যে তিনিও একজন। যারা ক্যান্টিন পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে।
“আমি আমার জীবনের অন্ধকার সময়কে মুছে ফেলতে পারি না, তবে এখন আমার কাছে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে। একই লক্ষ্য নিয়ে ক্যান্টিনে আমার সঙ্গে কাজ করা অন্য বন্দীরা আমাকে এই লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে,” আশা প্রকাশ করেছেন আরেক যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী । প্রতিবেশীকে হত্যার মামলায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তার দায়িত্বে রয়েছে 'বড়া পাও'। ক্যান্টিনগুলি পরিচালনার দায়িত্ব সামলাবেন সাজাপ্রাপ্ত বন্দীরা। তাদের হাতে তৈরি সুস্বাদু খাবার পৌঁছে যাবে জনসাধারণের কাছে। মিলবে উপার্জনের সুবিধাও। ইয়েরওয়াদা কারাগারের কাছেই খোলা হয়েছে প্রথম এই রেস্তোরাঁ।
বর্তমানে এই রেস্তোরাঁয় ১৫ জন বন্দী কাজ করছেন। তাদের মধ্যে, ৭ জন রান্নার দায়িত্বে রয়েছেন। ৮ জন রয়েছে খাবার সার্ভের দায়িত্ব। ব্যবসা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কর্মীর সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ক্যান্টিনে কর্মরত বন্দীদের জন্য বিশেষ ইউনিফর্ম-এর ব্যবস্থাও করা হয়েছে। মহারাষ্ট্র ডিপার্টমেন্ট অফ প্রিজন অ্যান্ড কারেকশনাল সার্ভিসেস রাজ্য জুড়ে এমন ক্যান্টিন খোলার পরিকল্পনা করেছে। রেস্তোরাঁটিতে পাওয়া যাচ্ছে জিভে জল আনা নানা স্বাদের হরেক খাবার। রয়েছে সিঙ্গারা, 'বড়া পাও', পোলাও, রাইস প্লেট, ভেজিটেবল গ্রেভি এবং রুটি সহ একাধিক আইটেম। এবিষয়ে রাজ্য পুলিশের অ্যাডিশনাল ডিজি অমিতাভ গুপ্ত বলেছেন, “কয়েদিদের জন্য এমন উদ্দোগের উদেশ্য হল সাজা শেষের পর তাদের বাইরের সমাজের জন্য তৈরি করা। এই ধরনের সুবিধা তাদের তাদের ভবিষ্যতে কাজের সুবিধার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসও বাড়াবে”।