উত্তরপ্রদেশের বেরিলিতে একটি সরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের মহম্মদ ইকবালের 'ল্যাব পে আতি হ্যায় দুয়া' কবিতা পাঠ করানোয় অভিযুক্ত শিক্ষক ওয়াজেরুদ্দিনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। আগেই তাঁকে বরখাস্ত করেছিল শিক্ষা দফতর।
বেরেলির ফরিদপুর থানার পুলিশ অভিযোগের দু'দিনের মাথায় শুক্রবার রাতে ওয়াজেরুদ্দিনকে গ্রেফতার করা করল। ওয়াজেরুদ্দিন প্রার্থনায় পড়ুয়াদের ধর্মীয় কবিতা পাঠে বাধ্য করে হিন্দুদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত এনেছিল বলে অভিযোগ করা হয় থানায়।
ফরিদপুর স্টেশন হাউস অফিসার দয়াশঙ্কর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, 'ওয়াজেরুউদ্দিনকে শুক্রবার গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাঁকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি ঘটার সময় অধ্যক্ষ নাহিদ সিদ্দিকী ছুটিতে ছিলেন এবং তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।'
সরকারি স্কুলের প্রার্থনায় পড়ুয়াদের দিয়ে পাঠ করানো হয়েছিল মহম্মদ ইকবালের ‘লাব পে আতি হ্যায় দুয়া’। যা ভাইরাল হতেই আর হুলস্থূলকাণ্ড বেঁধে যায় গত বুধবার। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নাহিদ সিদ্দিকী ও ওই স্কুলেরই শিক্ষক ওয়াজেরুদ্দীনের বিরুদ্ধে ফরিদপুর থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়। স্কুল শিক্ষা দফতর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই প্রধান শিক্ষিকা নাহিদ সিদ্দিকীকে বরখাস্ত করেছে। তদন্ত শুরু হয় শিক্ষক ওয়াজেরুদ্দীনের বিরুদ্ধে। অবশেষে শুক্রবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ, ইকবালের ‘লাব পে আতি হ্যায় দুয়া’ কবিতা পাঠের মাধ্যমে ছোট ছোট পড়ুয়াদের ইসলাম ধর্মে আকৃষ্ট করে ধর্মান্তকরণের চেষ্টা করা হচ্ছিল।
আরও পড়ুন- করোনা সুনামিতে ‘ছাড়খাড়’ চিন, একদিনে আক্রান্ত সাড়ে তিন কোটি, স্বাস্থ্য সংকট চরমে
কেন সরকারি স্কুলের প্রাথনায় ধর্মীয় কবিতা পাঠ করা হবে, এই প্রশ্ন তুলে থানায় প্রধান শিক্ষিকা ও শিক্ষক ওয়াজেরুদ্দিনেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কর্মী সোমপাল সিং রাঠোর। গোটাটার নেপথ্যে ধর্মান্তকরণের গভীর চক্রান্ত রয়েছে বলে দাবি তাঁর।
অভিযোগপত্রে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কর্মী সোমপাল সিং রাঠোর লিখেছেন, ‘শিক্ষক নাহিদ সিদ্দিকী এবং ওয়াজিরুদ্দীন হিন্দুদের অনুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্যে সরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের মুসলিম পদ্ধতিতে প্রার্থনা পাঠ করাচ্ছিলেন। ইসলামে পড়ুয়াদের আকৃষ্ট করার জন্য ওই দুই শিক্ষক এটা করছিলেন। আজতে যা ধর্মান্তকরণের প্রচেষ্টা।’
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকা নাহিদ সিদ্দিকীর দাবি ছিল, ঘটনার সময় তিনি ছুটিতে ছিলেন। ফলে ঘটনা সম্পর্কে তাঁর কিছুই জানা নেই। এর আগেও অভিযুক্ত শিক্ষক ওয়াজেরুদ্দিন একই কাজ করতে চাইলে তাঁকে বাঁধা দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা।
‘লাব পে আতি হ্যায় দুয়া’ কবিতাটি ১৯০২ সালে রচনা করেছিলেন মহম্মদ ইকবাল। তিনি আলাম্মা ইকবাল নামেও পরিচিত। ‘সারে জাহা সে আচ্ছা’ কবিতাটিও মহম্মদ ইকবালেরই রচনা।