সোমবার রাষ্ট্রসংঘের ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটে সুইডেনের কিশোরী পরিবেশ কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ বিশ্বের দেশনেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে, যে তাঁরা পরিবেশ পরিবর্তন সম্পর্কে তাঁদের "অন্তঃসারশূন্য কথার" ফলে তার শৈশব ছিনিয়ে নিয়েছেন।
"এই গোটাটাই ভুল হচ্ছে। আমার এখানে দাঁড়িয়ে থাকার কথাই নয়। সমুদ্রপারে আমার স্কুলে থাকার কথা আমার। তা সত্ত্বেও আপনারা আমার কাছে এসেছেন আশার খোঁজে? কোন সাহসে?" প্রশ্ন ১৬ বছরের পরিবেশ কর্মীর।
নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত এই সামিটের উদ্বোধনে এক আবেগময় ভাষণে গ্রেটা আরও বলে, "আপনাদের অন্তঃসারশূন্য কথা দিয়ে আপনারা আমার শৈশব, আমার স্বপ্ন চুরি করে নিয়েছেন।"
গ্রেটার কথায়, পরিবেশ বদল রুখতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না পৃথিবী। "কোন সাহসে আপনারা এখনও অন্যদিকে তাকিয়ে আছেন, এবং এখানে এসে বলছেন যে আপনারা যথেষ্ট করেছেন, যখন প্রয়োজনীয় নীতি বা সমাধানের চিহ্নমাত্র দেখা যাচ্ছে না?" বলে গ্রেটা।
বিশ্বজুড়ে নেতারা এই পৃথিবীর শিশুদের চোখে অসফল, এবং তারা এই বিশ্বাসঘাতকতা উপলব্ধি করতে শুরু করেছে, মন্তব্য গ্রেটার। সে আরও বলে, পরবর্তী প্রজন্ম একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে আজকের নেতাদের দিকে। "আপনারা যদি আমাদের হতাশ করেন, তাহলে বলতে পারি যে আমরা আপনাদের কখনও ক্ষমা করব না," নিজের ভাষণের শেষে বলে গ্রেটা।
রাষ্ট্রসংঘের ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটের আহ্বায়ক ছিলেন রাষ্ট্রসংঘের সেক্রেটারি-জেনারেল আন্তনিও গুটেরেজ। অনুষ্ঠানের আগে তিনি বিভিন্ন রাষ্ট্রের নেতাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, রীতিমত 'অ্যাকশন প্ল্যান' জমা না দিয়ে এই সামিটে বক্তব্য রাখার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে তাঁদের। এই সামিটের উদ্দেশ্য হলো, বিশ্ব উষ্ণায়ন রোধে ২০১৫ সালের প্যারিস এগ্রিমেন্টকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে রাষ্ট্রসংঘের সেক্রেটারি-জেনারেল পরিবেশ পরিবর্তনের সমূহ বিপদের ওপর জোর দিতে গিয়ে বলেন, "প্রকৃতি আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ। এবং আমরা যদি ভাবি প্রকৃতিকে বোকা বানাব, তবে আমরা নিজেদেরকেই বোকা বানাচ্ছি, কারণ প্রকৃতি সবসময়েই পাল্টা আঘাত করে। এবং বর্তমানে সারা বিশ্বে সেই আঘাত তীব্রতর হচ্ছে।"
বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতা যেমন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল, এবং নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জ্যাসিন্ডা আর্ডার্ন একদিনের এই সামিটে বক্তব্য রাখেন।