বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যেই গাজিপুর থেকে আবস্থানকারী কৃষকদের সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসন। সেই মত প্রস্তুতিও শুরু করে প্রশাসন। মজুত করা হয় প্রচুর পুলিশ বাহিনী, ব়্যাফ, জল কামান। এছাড়া, সিংঘু এবং টিকরির বিক্ষোভস্থলেও প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়।পাল্টা প্রতিবাদী কৃষকরাও জানিয়ে দেন, কোনও মতেই তাঁরা গাজিপুরের বিক্ষোভস্থল ছাড়বেন না। এমনকী প্রশাসন জোর খাটালে 'জীবন বাজি রেখে' চরম আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
নয়া কৃষি আইন প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলতেই থাকবে বলে হুঙ্কার দেন কৃষক নেতারা। এমড় নেতারা ঘোষণা করেন, মোদী সরকার তিন কৃষি আইন বাতিল না করা পর্যন্ত বিক্ষোভস্থল ছেড়ে নিজেদের বাড়িতে ফিরবেন না। এমনকী তাঁদের অভিযোগ, কৃষকদের আন্দোলন রুখতে গাজিপুরের প্রতিবাদস্থলে গুন্ডা পাঠিয়েছে বিজেপি সরকার। শুক্রবার রাতে দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমানায় গাজিপুরের আন্দোলনস্থল থেকে ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন-এর জাতীয় মুখপাত্র রাকেশ টিকায়েত ভেজা চোখে বলেন, 'আত্মহত্যা করব। কিন্তু, যতক্ষণ পর্যন্ত আইন প্রত্যাহার না হয়, ততক্ষণ আন্দোলন চালিয়ে যাব।'
গত রাতে কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গাজিপুর। বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়ার পাশাপাশি জল সরবরাহও বন্ধ করে দেওয়া হয় গাজিপুরে। তার মধ্যেই রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাজিপুরের আশাপাশের এলাকা থেকে আন্দোলনকারীদের সমর্থনে জমায়েত বাড়তে থাকে। সংযুক্ত কিষান মোর্চার অধ্যক্ষ নরেশ টিকায়েত দাবি করেন, হরিয়ানার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষকরা গাজিপুর সীমানায় দিকে আসছেন। আন্দোলনের তীব্রতা আরও বাড়বে। হরিয়ানায় কৃষকরা জিন্দ এলাকায় চণ্ডীগড় জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। ফলে আবারও গতি পাচ্ছে আন্দোলন। সেই পরিস্থিতিতে দোর না খাটিয়ে কিছুয়া পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে পুলিশ।
এর মধ্যেই দেখা যায়, বেশ কয়েকজন প্রতিবাদী কৃষককে আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি হাতে দেখা যায়। অনেকে আবার নিজেদের ব্যাগ গুটিয়ে লরিতে তুলে রাখছেন বলেও নজরে পড়ে। লুঠের ভয়ে ভীত বলে দাবি করেন কৃষকরা।
দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমানায় গাজিপুরে গন্ডগোলের আশঙ্কায় আপাতত কোমর বাঁধে নেমেছে প্রশাসন। ১ হাজারেরও বেশি পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। গাজিয়াবাদে নামানো হয়েছে ৪ কোম্পানি র্যাফ। আই-শৃঙ্খলা রক্ষায় আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই বাহিনী মোতায়েন থাকবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।
যদিও ঝামেলা এড়ানো যায়নি। গাজিপুরে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন আন্দোলনকারী কৃষকরা। কাঁদতে কাঁদতে টিকায়েত দাবি করেন, 'কৃষকদের সঙ্গে বেইমানি করা হল পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভ তুলতে বিজেপি নেতা-কর্মীরাও যোগ দিয়েছেন। আমি বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ খুলিনি। কিন্তু ওরা অত্যাচার করছে। প্রয়োজনে ওরা আমাদের লাঠি মারুক, কিন্তু গাজিপুর ছেড়ে আমরা যাব না।'
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন