যখন আমি মণিপুরে দুই মহিলার ওপর প্রকাশ্যে নৃশংস এবং সম্পূর্ণ লজ্জাজনক হামলার ভিডিও দেখেছিলাম, তখন আমি ভেঙে পড়েছিলাম। যা ঘটেছিল, তাকে নিছক অমানবিকতা বলে অজুহাত দেওয়া যায় না। কারণ, ঘটনাটি আরও গভীর কিছু বিষয় সামনে নিয়ে আসে। মণিপুরের জনজীবনে ও প্রতিবাদে নারীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীকী ভূমিকা আছে। তা ইমা কিথেলের ইমাস (নারীদের বাজার) হোক বা মীরা পাইবিস অথবা সেই মহিলারা, যাঁরা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে নুপি লাল (মহিলাদের যুদ্ধ)-এ নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁরাই হোন। যাইহোক, বাস্তবতা বেশ আলাদা। বোঝা গেল, পার্বত্য রাজ্যে নারীরা গভীর নিপীড়নের শিকার।
আমি আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, আমার ১৬ বছরের দীর্ঘ অনশনে, যখন আমি একফোঁটাও জল খাইনি, তখন আমাকে মণিপুরের প্রতীকে পরিণত করা হয়েছিল। আমার সংগ্রাম সত্ত্বেও, আমি অনুভব করেছি যে লোকেরা আমাকে 'শুধু একজন মহিলা' হিসেবে দেখবে। আমি নিজেকে রাজ্যের (মণিপুরের) সম্পত্তির মত অনুভব করেছি। নারীদের প্রতি মণিপুরের মানুষের এমনই মনোভাব। আমার সংগ্রামের ক্ষেত্রে, একমাত্র উদ্বেগের বিষয় মনে হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল করা হবে কি না। একটি সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে, মহিলাদের সবসময় টার্গেট করা হয়- আমি আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে এটা জানি। আর, কেবলমাত্র একজন নারীই অন্য নারীর কষ্ট বুঝতে পারে।
আরও পড়ুন- সীমার আইএসআই যোগ? জেরা করতেই উদ্ধার একাধিক পাক পাসপোর্ট, দানা বাঁধছে রহস্য
আমি মণিপুরের একজন মেইতেই বন্ধুর সঙ্গে কথা বলেছি এবং যা ঘটছে তার একটি হিসাব পেয়েছি। তারপর আমি বেঙ্গালুরুতে একজন কুকি বন্ধুর সঙ্গে কথা বলেছিলাম এবং একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন ছবি পেয়েছি। তারা উভয়ই পরস্পরের বিপরীত মত পোষণ করেছে এই হিংসার ব্যাপারে। এভাবেই বিদ্বেষ মণিপুরে ছড়িয়ে গিয়েছে। আমি মনে করি যে আমাদের এই বর্তমান পরিস্থিতির অন্যতম কারণ হল, কেন্দ্রের অবহেলা। শুধু এখন নয়, কয়েক দশক ধরে সাধারণভাবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো এবং বিশেষ করে মণিপুরকে কেন্দ্রীয় সরকার অবহেলা করেছে।