‘স্বামীকে খুন করেছি আমি’ই’….! স্ত্রীর 'স্বীকারোক্তি'র মাত্র কয়েকদিনের মাথায় জীবিত হয়ে চমকে দিলেন স্বামী। যা দেখে কার্যত অবাক স্ত্রী আফসানা। নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। কীভাবে এটা সম্ভব? বন্ধুরা মিলে তো বেধড়ক মারধর করে জখম করে ফেলেছিলেন স্বামী নওশাদকে। পরের দিন সকাল থেকে নিখোঁজ হন নওশাদ। তখনও আফসানার দৃঢ় বিশ্বাস বন্ধুরা নিশ্চয় স্বামীকে এমন কোথাও কবর দিয়েছেন যা পুলিশেরও নাগালের বাইরে।
এরপর থেকে শুরু নিখুঁত অভিনয়। স্বামীকে খুঁজে দেওয়ার জন্য বারে বারে থানায় গিয়ে আবদার চলত আফসানার। যদিও তার এই নিখুঁত অভিনয় প্রথমে ধরতে পারেন নি দুঁদে আধিকারিকরাও। ২৮ জুলাই পুলিশের কাছে আফসানাকে "স্বীকার" করেন, ঝগড়ার মাঝেই তিনি তার বন্ধুদের সঙ্গে মিলে স্বামীকে পিটিয়ে মারেন। তাহলে দেহ কোথায়? এপ্রশ্নের উত্তর যেমন অজানা ছিল আফসানার কাছে, তেমনই পুলিশের কাছেও।
মামলা প্রসঙ্গে এক সিনিয়ার পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, আফসানা "স্বীকার করেছেন" যে নওশাদ এবং তার মধ্যে ৫ নভেম্বর, ২০২১-এর রাতে ঝগড়া হয়েছিল। আফসানা তার বন্ধুদের সাহায্যে নওশাদকে বেধড়ক মারধর করেন। পরের দিন, নওশাদ নিখোঁজ হওয়ার পর আফসানা ভেবেছিলেন, নওশাদ মারা গেছেন এবং তার বন্ধুরা লাশটি কবর দিয়েছে''। ২৮ জুলাই, পুলিশ আফসানাকে তদন্তকারীদের মিথ্যা তথ্য প্রদানের অভিযোগে গ্রেফতার করে।
২৯ জুলাই, সংবাদপত্রে নওশাদের ছবিসহ আফসানার গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়ে। পাথানামথিট্টার কুডাল থেকে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার দূরে ইদুক্কির থমমানকুথু গ্রামের এক ব্যবসায়ী ছবি দেখেই নওশাদকে চিনতে পারেন। ওই ব্যবসায়ী লোকটির পরিচয় সম্পর্কে তার সন্দেহের কথা এক পুলিশকর্মীকে জানান। পুলিশ পরে নিশ্চিত করেছে যে থমমানকুথুর লোকটি নওশাদ। স্ত্রী’র অত্যাচারে ঘর ছেড়ে এক খামারে কাজে লাগেন নওশাদ। এই বিষয়ে এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘স্ত্রী’কে খুবই ভয় পেত নওশাদ। মারধরের পর সেই রাতে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে অন্যত্র চলে যান নওশাদ। তার কাছে মোবাইল না থাকায় আমরা তাকে ট্র্যাক করতে পারিনি’।
রবিবার, জামিনে মুক্তি পান আফসানা। আফসানা অবশ্য জামিন পেয়েই পুলিশের বিরুদ্ধেই মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, “তারা আমাকে নির্যাতন করে। আমি সেই বিবৃতি দিতে বাধ্য হই। আফসানা আরও বলেন, ‘পুলিশের বিরুদ্ধে মানবাধিকার প্যানেলের কাছে অভিযোগ দায়ের করার পরিকল্পনা করছি। আমি কীভাবে আমার স্বামীকে হত্যা করতে পারি?’’ এদিকে নওশাদ, কালাঞ্জুরে তার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করার পরে, ইদুক্কিতে ফিরে এসেছে,তার কর্মস্থলে।