এক জুনের বিকেলে প্রায় ২,০০০ জন লোক রবিন্দরের বাড়ির বাইরে জড় হয়েছিল। আর, বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে পরিবারকে চলে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেয়। কারণ, রবিন্দরের স্ত্রী একজন কুকি। মণিপুরের জাতিগত সমস্যার রেখা গভীর হওয়ার সঙ্গেই মেইতেই এবং কুকিরা একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য রুখে দাঁড়িয়েছেন। আর, তাতে আটকে পড়েছেন রবিন্দরের মত 'বহিরাগতরা'। যাঁরা স্থানীয় বাসিন্দাদের বিয়ে করেছিলেন। আর, মণিপুরে বসতি স্থাপন করেছিলেন। আর, এখন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পার্বত্য রাজ্যে আটকা পড়ে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছেন।
বিহার থেকে এসেছেন
রবিন্দর হলেন বিহারের মতিহারির একজন নাপিত। তাঁর বয়স ৪৭ বছর। তিনি ৩০ বছর আগে মণিপুরে এসেছিলেন এবং ইম্ফল উপত্যকার ল্যাঙ্গোল এলাকায় বসতি স্থাপন করেছিলেন। এই ল্যাঙ্গোল একটি বৃহত্তর মেইতেই জনবসতিপূর্ণ এলাকা। তাঁদের বাড়িতে সাম্প্রতিক হামলার কথা এখনও রবিন্দরের স্পষ্ট মনে আছে। তিনি বলেন, 'যখন ভিড় আমাদের বাড়িতে যায়, তখন আমি বাড়িতে ছিলাম না। আমি যখন সেখানে ছুটে যাই, ততক্ষণে নিরাপত্তা বাহিনী পৌঁছে গেছে। বাহিনী কোনওভাবে আমাদের উদ্ধার করে একটি ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যায়।'
আরও পড়ুন- একবেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে ৭৩টি মামলার শুনানি, হাইকোর্টে সোমবার অনন্য নজির
প্রথমে ভয় পাননি
রবিন্দর জানিয়েছেন যে ৩ মে মণিপুরে হিংসার প্রথম রিপোর্ট আসার পরে তিনি ভয় পাননি। এই ব্যাপারে রবিন্দর বলেন, 'যেহেতু আমি (জাতিগতভাবে) এখানকার নই, আমি ভেবেছিলাম আমরা নিরাপদেই থাকব। এছাড়াও আমার বাড়িওয়ালা একজন মেইতেই সম্প্রদায়ের। তিনি আমাকে বলেছিলেন যে আমাকে রক্ষা করবেন। না-বলে আমাকে ছেড়ে যাবেন না। কিন্তু, জনতা শেষ পর্যন্ত এসেছিল। বাড়িওয়ালা বলেছেন, ভিড় দেখে তিনি বাড়িকে রক্ষা করেছেন। তাঁদের বুঝিয়েছেন যে এই বাড়ি একজন মেইতেইয়ের।' রবিন্দর সম্প্রতি তাঁর স্ত্রী এবং তিন সন্তানকে নিয়ে জিরিবামের কুকি-অধ্যুষিত এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁর আত্মীয় রয়েছে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত জীবিকা নির্বাহের জন্য ইম্ফলে ফিরে এসেছেন।