অফিস ছুটির পরও ওঁদের নিস্তার নেই। বসদের চোখরাঙানি থেকে রেহাই পেতে মোবাইলে চোখ-মুখ গুঁজে রাখেন ওঁরা। সেজন্য পরিজদনদের থেকে ওঁদের শুনতেও হয়, "বাড়িটাকেই তো অফিস বানিয়ে ফেলেছো," কিংবা "অফিসে থাকলেই তো পারো" গোছের ঝাঁঝালো মন্তব্য। ওঁরা মুখ বুজে সব হজম করেন। কী করবেন? উপায় নেই, অফিস ছুটির পরও অফিসের ই-মেল কিংবা বসের ফোন কল উপেক্ষা করার 'দু:সাহস' নেই তো ওঁদের। এবার এই যন্ত্রণার দিন অবশ্য শেষ হচ্ছে, সৌজন্যে ‘রাইট টু ডিসকানেক্ট বিল ২০১৮’।
'প্রাইভেট মেম্বারস বিলে'-র অধীনে ওই বিলে বলা রয়েছে, অফিস ছুটির পর বা ছুটির দিনে কোনও কর্মী নির্দ্বিধায় অফিসের ফোন কল কিংবা ই-মেল উপেক্ষা করতে পারবেন। এমন বিলই মঙ্গলবার লোকসভায় উত্থাপন করলেন এনসিপি সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে।
আরও পড়ুন, লোকসভায় পাশ নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল
এমন বিল কেন? জবাবে যুক্তি দেখিয়েছেন সাংসদ। তাঁর মতে, বহু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কর্মীরা তাঁদের পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য হারাচ্ছেন, যাতে আদপে তাঁদের ক্ষতি হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে ডিজিটাল কমিউনিকেশনকেই দায়ী করা হয়েছে। কারণ ডিজিটাল মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনও প্রান্ত থেকেই কাজ করা সম্ভব। সাংসদের মতে, কর্মীদের 'টেলিপ্রেসার' ক্রমশ বাড়ছে। সারাক্ষণ ফোন চেক করা, ই-মেল চেক করায় কর্মীদের উপর মানসিক চাপ বাড়ছে।
বিলে বলা হয়েছে, অফিস ছুটির পর কিংবা ছুটির দিনে অফিসের ফোন কল কিংবা ই-মেলের জবাব দিতে কর্মীরা বাধ্য হবেন না। অর্থাৎ, অফিস ছুটির পর কিংবা ছুটির দিনে কোনও অফিসের কাজ নয়। এমনকি, আপনার বসও যদি সেইসময় কোনও কাজের নির্দেশ দেন, এই বিল পাস হলে, আপনি নির্দ্বিধায় না বলতে পারবেন। ছুটির দিন বা অফিস ছুটির পর অফিস সংক্রান্ত কোনও ফোন কলের জবাব দিতে কোনও কর্মী বাধ্য থাকবেন না। এজন্য অবশ্যই কোনও কর্মীর বিরুদ্ধে নিয়মানুবর্তিতা লঙ্ঘনের কোনও অভিযোগ করতে পারবে না সংশ্লিষ্ট অফিস।
তবে যদি কোনও কর্মী নির্দিষ্ট সময়ের পরও অফিসের কাজ করে থাকেন, তা পারষ্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে করা যাবে। সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা পাবেন ওই কর্মী। বিলে আরও বলা হয়েছে, প্রয়োজনে কর্মীদের কাউন্সেলিং করানোরও ব্যবস্থা থাকছে। কাজের বাইরেও যাতে কর্মীরা স্বাধীনভাবে পরিজনদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন, সেকথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
Read the full story in English