রাজ্যের মিড ডে মিল নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে কেন্দ্রীয় দলের আসা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি এখন সরগরম। তার মধ্যেই মালদার চাঁচলে মিড ডে মিলের মজুদ করা চালে মরা টিকটিকি এবং ইঁদুর উদ্ধারের ঘটনায় স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, সাব ইনস্পেক্টর অফ স্কুলকে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দিল স্কুল শিক্ষা দফতর। পাশাপাশি, এই ঘটনায় চুক্তিভিত্তিক কর্মী 'এডুকেশন সুপারভাইজার' স্বপ্না সরকারকে চাকরি থেকে রিমুভ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শাউরগাছি বিদ্যানন্দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
বুধবার চাঁচলের ওই স্কুলে মিড ডে মিলের মজুদ করা চালে মরা টিকটিকি এবং ইঁদুর উদ্ধার হয়। ঘটনায় গোটা এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। প্রধান শিক্ষককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দা এবং অভিভাবকরা। এই ঘটনায় বিডিওর নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দেন মালদার জেলাশাসক নিতিন সিংহানিয়া। প্রাথমিক তদন্তে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায়, বিদ্যানন্দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বলকুমার সাহা রায় এবং খরবা দুই নম্বর সার্কেলের সাব-ইন্সপেক্টর অফ স্কুল আবদুল হানিফকে সাসপেন্ড এবং চুক্তিভিত্তিক কর্মী স্বপ্না সরকারকে চাকরি থেকে ডিসমিস করার জন্য শিক্ষা দফতরকে সুপারিশ করেছেন মালদার জেলাশাসক।
সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই অভিযুক্ত দু'জনকে সাসপেন্ড এবং একজনকে চাকরি থেকে ডিসমিস করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা দফতর। গতকাল রাত্রে এই নির্দেশ আসার পর তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। শিক্ষা দফতরের এই নির্দেশকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অভিভাবক থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা। বিদ্যানন্দপুর প্রাথমিক স্কুলের অভিভাবক আকবর আলি, মফিজুর রহমান, মুস্তাক আলমরা জানিয়েছেন, প্রশাসন যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক-সহ আরও দু'জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এতে তাঁরা খুশি।
আরও পড়ুন- কুয়াশায় ব্যাহত গঙ্গাসাগরে পারাপার, ভেসেলের ঘাটে আটকে কয়েক লক্ষ যাত্রী
এই ঘটনা সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতোর। মালদা বিজেপি উত্তর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক রতন দাস অভিযোগ বলেন, 'চুনোপুঁটিদের পাশাপাশি রাঘব বোয়ালদের ধরতে হবে। শিশুদের খাবারের মিড ডে মিলের গুণগত মান নিয়ে সরব হয়েছেন আমাদের রাজ্যের বিরোধী দলনেতাও। কেন্দ্রীয় দল তদন্তে আসছে। শিশুদের মিড ডে মিল নিয়ে কোনও ছেলেখেলা আমরা কোনওভাবেই বরদাস্ত করব না।'
যদিও বিজেপির এই অভিযোগকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
মালদা জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি এটিএম রফিকুল হোসেন বলেন, 'অভিযোগ পেয়ে আগেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছিল জেলা প্রশাসন। অভিযোগ প্রমাণিত হবার পরেই ব্যবস্থাও নিয়েছে। এখানে রাঘববোয়াল কাউকে আড়ালের কোনও ব্যাপারই নেই।'