/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2020/01/bezos.jpg)
অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস
অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের সাম্প্রতিক ভারত সফর নিয়ে মার্কিন সংবাদপত্র 'দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট'-এর সঙ্গে টুইটারে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লেন জনৈক বিজেপি নেতা। বেজোসের মালিকানাধীন এই সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে বিজেপি নেতার অভিযোগ, ভারত সম্পর্কে তাদের মতামত "পক্ষপাতদুষ্ট"। সম্প্রতি ভারত সফরে এসে বেজোস প্রতিশ্রুতি দেন যে ভারতের ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পে ১ বিলিয়ন (১০ কোটি) মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে তাঁর সংস্থা।
১৫ জানুয়ারি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভারতের প্রশংসা করেন বেজোস, এবং বলেন যে একবিংশ শতাব্দী হবে ভারতের শতাব্দী, কারণ এ দেশের সজীব এবং শক্তিশালী গণতান্ত্রিক পরিকাঠামো। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিজেপির পররাষ্ট্র শাখার প্রধান বিজয় চৌথাইওয়ালে কটাক্ষ করে টুইট করেন যে বেজোসের উচিত একথা "ওয়াশিংটন ডিসি-তে তাঁর কর্মচারীদের" বলা, নতুবা তাঁর "চার্ম অফেন্সিভ" (বাংলায় মর্মার্থ করলে 'কমনীয় হামলা') সম্ভবত "সময় এবং অর্থের অপচয়" হবে।
Mr @JeffBezos , please tell this to your employees in Washington DC. Otherwise your charm offensive is likely to be waste of time and money . https://t.co/L06kI0AqLn
— Dr Vijay Chauthaiwale (@vijai63) January 16, 2020
মন্তব্যের তীর ওয়াশিংটন পোস্টের দিকেই তাক করে চালানো হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিল, বা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে দেশময় প্রতিবাদের মতো আরও কিছু বিষয়ে মোদী সরকারের সমালোচনায় সম্প্রতি সরব হয়েছে এই সংবাদপত্র।
এই মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টের 'গ্লোবাল অপিনিয়নস' বিভাগের সিনিয়র এডিটর ইলাই লোপেজ লেখেন, "ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিকরা কী লিখবেন, তা জেফ বেজোস বলে দেন না। স্বাধীন সাংবাদিকতা মানে কোনও সরকারকে খুশি করা নয়। কিন্তু আমাদের সংবাদদাতা এবং কলাম লেখকদের কাজ যে ভারতের গণতান্ত্রিক প্রথা মেনেই হয়, সে নিয়েও কোনও প্রশ্ন নেই।"
Just to clarify: Jeff Bezos doesn't tell Washington Post journalists what to write. Independent journalism is not about charming governments. But there's no question the work of our correspondents and columnists fits within India's democratic traditions. https://t.co/TzrMZoCw69
— Eli Lopez (@elopezgross) January 17, 2020
এই সূত্র ধরে বেশ কিছুটা বচসা চলে দু'পক্ষের, যা চলাকালীন এই মার্কিন সংবাদপত্রকে ভারতের বিরুদ্ধে "পক্ষপাতিত্ব" দেখানোর অভিযোগ তোলেন বিজেপি নেতা। পরে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে চৌথাইওয়ালে জানান, "আমি সংস্থা হিসেবে অ্যামাজনের বিরোধিতা করছি না, বরং আমি তাদের নিয়মিত গ্রাহক... জেফ বেজোসের উচিত, বাড়ি ফিরে ওয়াশিংটন পোস্টকে ভারত সম্পর্কে তাঁর মতামত জানানো। ওয়াশিংটন পোস্টের সম্পাদকীয় নীতি অত্যন্ত পক্ষপাতদুষ্ট এবং অ্যাজেন্ডা ভিত্তিক।"
আরও পড়ুন: ‘ভাইরাল’ ভাইরাসে আক্রান্ত সমাজ, ঠিক ভুল একাকার
রয়টার্সকে তাদের বিবৃতিতে ওয়াশিংটন পোস্ট পাল্টা জানায় যে "ভারতকে তারা নিরপেক্ষ এবং সঠিক ভাবেই কভার করেছে, এমনকি যখন সরকারের তরফে তথ্যপ্রবাহের ওপর কড়া নিয়ন্ত্রণ রাখা হয়েছে, তখনও"। এছাড়াও ওই সংবাদপত্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে তাদের 'অপিনিয়নস' বিভাগ সংবাদ বিভাগের আওতাধীন নয়, এবং তাদের কাজ হলো ভারত এবং পৃথিবীর অন্যান্য দেশ থেকে আসা বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির মতামত প্রকাশ করা।
তাঁর ভারত সফরে সরকারের কাছ থেকে যথেষ্ট শীতল ব্যবহারই পান বেজোস। ছোট ব্যবসায়ীদের দেওয়া বয়কটের ডাক ভেদ করে অ্যামাজনের সিইও-র সঙ্গে দেখা করেন নি কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েও ব্যর্থ হন বেজোস। কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল বলেন যে ভারতে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে "বিরাট কোনও অনুগ্রহ" করছে না অ্যামাজন, উল্টে অ্যামাজনের লোকসানের পরিমাণ ভারতে তাদের ব্যবসায়িক রীতিনীতি সম্পর্কে সন্দেহের উদ্রেক করে।
অবশ্য তার পরদিনই সুর পাল্টে মন্ত্রী বলেন, তাঁর মন্তব্যকে প্রেক্ষিতের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিনিয়োগকে সবসময়ই স্বাগত জানান তিনি, তবে তিনি বলতে চেয়েছিলেন যে এই বিনিয়োগ আইনি গণ্ডীর মধ্যে হওয়া উচিত।