আয়ুষ্মান ভারত সম্পর্কে রোগীকে ভুল বুঝিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ, কাঠগড়ায় নামি সরকারি হাসপাতাল। শ্যাম সুন্দর তার বৃদ্ধা মাকে নিয়ে দিল্লির সেবা নগরে এককামরা ঘরে থাকেন। পাশেই ফুলের দোকান চালান তিনি। বেশ কিছুদিন আগে উচ্ছেদ অভিযানে তার সেই দোকান ভাঙা পড়ে। সংসার চালানো রীতিমত কঠিন হয়ে পড়ে শ্যাম সুন্দরের পক্ষে। এর মাঝেই ঘটে যায় বড় বিপত্তি। ছাদ থেকে পড়ে পা ভাঙে। একাধিক হাসপাতাল ঘুরে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি হন।
Advertisment
চিকিৎসক ডাঃ মনীশ রাওয়াত তাদের জানান, অস্ত্রোপচারের খরচ দেড় লক্ষ টাকা। শেষ পর্যন্ত অনেক অনুরোধের পর সেই খরচ কমিয়ে ৩৫ হাজার টাকায় নিয়ে আসা হয়। সরকারী হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের এত খরচ তা ঘুণাক্ষরেও ভাবেন শ্যামসুন্দর। কিছুদিন পর তার সেই আশঙ্কা সত্যি হয়। পরে যখন হাসপাতালে চেক-আপের জন্য যান। অন্য রোগীদের কাছে সেকথা বলতেই তিনি বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। এরপর তার অভিযোগ খতিয়ে দেখে চিকিৎসক ডাঃ মনীশ রাওয়াতকে সিবিআই তার হেফাজতে নিয়ে জেরা করা শুরু করে। জানা যায় শুধু শ্যামসুন্দর নয়, তারমত আরও অনেকেই এভাবে প্রতারিত হয়েছেন।
মিরাটের সালাহপুর গ্রামের বছর ২২-এর লাইটম্যান মোহিত কুমারের সঙ্গেও একই রকম ঘটনা ঘটে। মোহিত কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের একজন সুবিধাভোগী ছিলেন। কিন্তু তাকে বোঝানো হয় সেই টাকা পেতে তার তিন থেকে চার মাস সময় লাগবে।
অস্ত্রোপচারের খরচ বাবদ ৮০হাজার টাকা চাওয়া হয় তার কাছেও। চিকিৎসকের কথা মত সেই টাকা জমাও করা হয়। তার ভাই রিংকু বলেছেন ‘চিকিৎসক এমন ভাবে আমাদের বুঝিয়েছিলেন আমরা তার প্রতারণা ধরতেই পারিনি। দাদার অস্ত্রোপচারের জন্য আমাদের বেশ কিছু টাকা ঋণ নিতে হয় যা আমরা আজও শোধ করে চলেছি’। মোহিতের বোন মনীষা বলেন, দাদার সামান্য উপার্জনে আমাদের সংসার চলে। এতটাকা মাথার ওপর দেনা হয়ে গিয়েছে, দাদার সুস্থ হতেও কয়েকদিন সময় লাগবে, কীভাবে সংসার চলবে সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।