Advertisment

সাপের কামড়ে কাউকে মরতে দেবেন না, পণ করেছেন এই চিকিৎসক

এখনও পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে ১২০০ মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন তিনি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

সকলকেই প্রায় দক্ষতার সঙ্গে বাঁচিয়ে তুলেছেন ডাঃ গিরি।

সালটা ছিল ২০০৮! হটাৎ করেই রাতের বেলা গোখরোর কামড় খান এক তরুণী।  তাকে তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় এক বেসরকারি হাসপাতালে। কিন্তু সাপের কামড়ের চিকিৎসায় বেসরকারি হাসপাতালের তেমন একটা অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে তরুণীকে ডিব্রুগড় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু পথেই মারা যান ওই তরুণী। এই ঘটনা চোখের সামনে দেখে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন ওই হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট সুরজিৎ গিরি। সেই থেকে সাপের কামড় থেকে রোগীদের বাঁচাতে অ্যান্টিভেনম এবং সাপের কামড় নিয়ে বিশদে পড়াশোনা শুরু করেন। এখন পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে ১২০০ মানুষের প্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। জুটেছে খ্যাতিও। কিন্তু কেমন ছিল তাঁর এই দীর্ঘ যাত্রাপথ?

Advertisment

ডাঃ গিরি জানান, “প্রথম সাপের কামড়ের চিকিৎসার দায়িত্ব তিনি সামলেছেন যখন তিনি শিবসাগর থেকে প্রান্তিক শহরে বদলি করা হয়েছিল। একটি কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তার কথায় সেখানে পরিকাঠামো বলতে কিছুই ছিল না। অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করে রোগীকে পর্যবেক্ষণে রেখে প্রাণ বাঁচাই। আর তার পর থেকেই শুরু হয় আমার পথ চলা। প্রথম দিকে মাসে দু-একটা করে রোগী আসত এখন  প্রতি মাসে ৬০ থেকে ৬৫ জন রোগী আসেন সাপের কামড় খেয়ে।”

সকলকেই প্রায় দক্ষতার সঙ্গে বাঁচিয়ে তুলেছেন ডাঃ গিরি। তিনি বলেন, “অসমের গ্রামাঞ্চলে সাপের কামড় খুবই সাধারণ। যখন কোনও রোগীকে বিষধর সাপ কামড়ে দেয়, তখন সেই ব্যক্তি এবং তার নিকটাত্মীয়রা আতঙ্কের মধ্যে থাকে। তাই রোগী শেষ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠলে তাদের মুখে স্বস্তির অনুভূতি দেখাটাই একজন ডাক্তার হিসেবে আমার জন্য সবচেয়ে বড় তৃপ্তি।”

এখন সেই হেলথ কমিউনিটি হেলথ সেন্টারেই সাপের চিকিৎসার জন্য আলাদা ওয়ার্ড স্থাপন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। সেই গ্রুপের মাধ্যমে সাপের কামড়ানোর পরে প্রাথমিক কী কী করা উচিত সে ব্যাপারে বিভিন্ন তথ্য তিনি শেয়ারে করেন। এর পাশাপাশি ফাস্ট রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে।

সাপের কামড় খেয়ে আর যাতে কাউকে প্রাণ হারাতে না হয় সেটাই ডা. গিরির এখন মূল লক্ষ্য। এ পর্যন্ত তাঁর রিপোর্ট কার্ড বলছে ৪৬৪ জন সাপে কামড় খাওয়া মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন তিনি। তার মধ্যে ৫৩ জনকে বিষধর গোখরো প্রজাতির সাপ কামড়েছিল। সকলকেই সুস্থ করেছেন ডাক্তারবাবু। গ্রামের মানুষের কাছে তিনি শুধু একজন ডাক্তার নন, তিনি ঈশ্বর, বলছেন শিবসাগরের চা বাগানের শ্রমিক দুলেশ্বর গোয়ালা। তার মত আরও অনেকেই গ্রামের ডাক্তারবাবুর জন্য প্রাণে বেঁচেছেন।

Snake Bite
Advertisment