scorecardresearch

নিখুঁত ছকে শ্রদ্ধার দেহ লোপাট করেছিল আফতাব, সরেজমিনে তদন্তের পর তাজ্জব পুলিশও

জঙ্গল থেকে দেশের ১৩টি স্থানের টুকরো উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা।

Aftab_Poonawala
দিল্লিতে তাদের ব্যাগপত্র আনতে কে মুম্বই যাবে তা নিয়ে দুজনের মধ্যে প্রবল বচসা হয় তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে পুলিশ।

মেহরৌলির চত্তারপুর পাহাড়ি এলাকার এক গলিতে, দিল্লি শহরেরই অন্য জায়গার মত একটি সবুজ অ্যাপার্টমেন্ট আছে। অভিযোগ যে সেই বিল্ডিংয়েই ১৮ মে বছর ২৭-এর লিভ-ইন পার্টনার শ্রদ্ধা ওয়াকারকে হত্যা করেছিল আফতাব পুনাওয়ালা (২৮)। পুলিশকে জেরায় আফতাব জানিয়েছে, শ্রদ্ধার দেহ সে মেহরৌলির জঙ্গলে ফেলেছিল।

মঙ্গলবার সকালে সেই দেহাংশ উদ্ধার করতে আফতাবকে মুখে স্কার্ফ পরিয়ে মেহরৌলির জঙ্গলে নিয়ে যায় দিল্লি পুলিশের একটি বিশেষ দল। তদন্ত শেষে তেমন কিছু না-পেলেও কিছু হাড়ের টুকরো পুলিশ উদ্ধার করেছে। সেগুলো শ্রদ্ধারই কি না, জানতে ফরেনসিক দফতরে পাঠিয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, টুকরোগুলো দেখে মনে হয়েছে, সেটা শরীরের ১৩টি স্থানের।

লিভ-ইন পার্টনার আফতাবের সঙ্গে যে বিল্ডিংটিতে শ্রদ্ধা থাকতেন, তার বাইরের রাস্তাটি ঢালু এবং বেশ সরু। এটা শুধু ওই সবুজরঙা বাড়ির পাশের রাস্তাই না। মেহরৌলির অনেক রাস্তারই এমনটাই বৈশিষ্ট্য। দেখেই বোঝা যাবে যে পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি হয়েছে। এই চত্বরের বেশিরভাগটাই আবাসিক এলাকা। মাঝে মধ্যে দুই একটা দোকান আছে। সেগুলোও খুব এলাকা বড় না। স্থানীয় বাসিন্দারাই করেছেন ওই সব দোকান।

এলাকাবাসীকে দূরে ছুটতে হয় না। আবার কিছু অর্থও হাতে আসে, এই লক্ষ্যে। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, এই এলাকার বাসিন্দারা বেশিরভাগই অন্যান্য এলাকা থেকে এসেছেন। কাজের সূত্রে এই অঞ্চলে থাকেন। তার মধ্যেই অনেকেই আবার আইটি কর্মী। ফলে, এলাকাবাসীর কে কখন বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন বা বাড়িতে ফিরছেন, তা নিয়ে প্রতিবেশীরা খুব একটা মাথা ঘামান না।

তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সেই সুযোগটাই নিয়েছেন অভিযুক্ত আফতাব। শ্রদ্ধাকে খুনের পর সে সাতসকালে দেহাংশগুলো প্লাস্টিকের প্যাকেটে ভরে বেরিয়ে পড়ত। সেই সময় এই এলাকায় সচরাচর কেউ বাড়ির বাইরে বেরোতেন না। ফলে তরুণ ভাড়াটের আচরণ অথবা গতিবিধি নিয়ে কোনওরকম সন্দেহও প্রকাশ করেননি শ্রদ্ধা-আফতাবের প্রতিবেশীরা।

আরও পড়ুন- দেহাংশ উদ্ধারের চেষ্টায় পুলিশ, ‘মেয়ের খুনি’ আফতাবের ফাঁসি চান শ্রদ্ধার বাবা

তদন্তকারীরা লক্ষ্য করে দেখেছেন যে আফতাবদের বাড়ির কাছেই রয়েছে প্রধান সড়ক। সেই পথ দিয়ে একটু এগোলেই চলে যাওয়া যায় জঙ্গলের দিকে। সেই প্রধান সড়কে আফতাব একটি বাড়ি, দোকান, গ্যারেজ আর ক্লিনিকের পাশ দিয়েই চলে যেত। জঙ্গল থেকে কয়েক হাত দূরে বড় রাস্তা ইংরেজির টি এর আকারে ভাগ হয়ে গিয়েছে। তার আশপাশেই রয়েছে একটি ভ্যাটের মত অঞ্চল। যেখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের ময়লা জমা করা হত। আর, তারই আশপাশে গিয়ে হাতের প্লাস্টিকটা ফেলে দিত অভিযুক্ত। বাড়ি থেকে এই পথটুকু যেতে তার মাত্র ২০ মিনিট সময় লাগত। আর কেউ সন্দেহও করত না।

আফতাবের এই নিখুঁত পরিকল্পনা দেখে তদন্তকারীরা হতবাক। তাঁরা অভিযুক্তের অতীত জানারও চেষ্টা করছেন। তদন্তকারীরা মনে করছেন, রীতিমতো পেশাদার খুনির মত গোটা পরিকল্পনা কার্যকর করেছে অভিযুক্ত। যা সাধারণ কোনও নাগরিকের পক্ষে করা সম্ভব নয় বলেই তদন্তকারীদের অনুমান। আফতাব কি এর আগেও মেহরৌলির এই অঞ্চলে এসেছিল? এখানে কি সে আগেও থাকত? মাত্র ছয় মাসের মধ্যে গোটা এলাকাটাকে সে হাতের তালুর মত চিনলই বা কীভাবে? এখন এই বিষয়গুলোই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।

Read full story in English

Stay updated with the latest news headlines and all the latest General news download Indian Express Bengali App.

Web Title: This is the place where body of live in partner shraddha was dumped by aftab