বড়সড় সাফল্য পেল কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ। বুক এবং পিঠ এফোঁড়-ওফোঁড় হওয়া তিনটি রড এক ব্যক্তির শরীর থেকে বের করল সাত-সদস্যের একটি চিকিৎসক দল। সময় লাগল তিন ঘণ্টা। আপাতত চম্পাহাটির দিনমজুর উদয় সর্দারের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তাঁকে সিসিইউতে রাখা হয়েছে।
চম্পাহাটির চিনার মোড়ে বিশু পালের বাড়িতে রাজমিস্ত্রির সঙ্গে উদয় জোগাড়ের কাজ করছিলেন দোতলায়। ওই পাড়ারই বাসিন্দা তিনি। যেখানে কাজ করছিলেন, তার পাশ দিয়ে বিদ্যুতের তার গিয়েছে। কাজ করার সময় অমনোযোগী থাকায় ওই তারে উদয়ের হাত ঠেকে যায়। ঝটকা খেয়ে দোতলার ছাদ থেকে নীচের বারান্দায় পড়ে যান তিনি, এবং সেখান থেকে গিয়ে পড়েন একটি পিলার থেকে বেরিয়ে থাকা লোহার রডের ওপর। উপুড় হয়ে পড়ায় তিনটি রড পেট ফুটো করে তাঁর পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়।
প্রাথমিকভাবে স্থানীয়রা টেনসার ব্লেড দিয়ে রড কাটেন। তারপর প্রথমে উদয়কে নিয়ে যাওয়া হয় বারুইপুর হাসপাতালে। সেখান থেকে বেলা তিনটে নাগাদ ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। তড়িঘড়ি সাত জন চিকিৎসকের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। অপারেশন থিয়েটারে ফের পূর্ত বিভাগের তিন কর্মী টেনসার ব্লেড দিয়ে রড কেটে ছোট করেন। টেবিলে শুইয়ে সহজে অপারেশন করার জন্যই রড তিনটিকে ছোট করা হয়। বিকেল চারটে থেকে সাতটা পর্যন্ত অপারেশন চলে। দেখা যায়, একটি রড লিভারের পাশ দিয়ে গিয়েছে। অন্য একটি রড কিডনির পাশ দিয়ে গিয়েছে। আর একটি রড বৃহদন্ত্রকে ফুটো করে দিয়েছে।
চিকিৎসক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, "খুব বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। খুব কঠিন অস্ত্রোপচার। সফলভাবে করতে পেরেছি।" অ্যানাস্থেসিয়া বিভাগের গৌরী মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের কাছে এটা চ্যালেঞ্জ ছিল। সকলে মিলে এই অস্ত্রোপচারে সাফল্য পেয়েছি।"