Advertisment

দুর্গন্ধে টেকা দায়, হাসপাতালের মর্গে উপচে পড়ছে দেহ, মণিপুর হিংসায় মৃতের প্রকৃত সংখ্যা নিয়েই জল্পনা

ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলেও কেন পরিবারের তরফে দেহ দাবি করা হচ্ছে না?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Amit Shah, Amit Shah NSFU, Amit Shah Manipur violence, Amit Shah on Manipur dispute, Amit Shah justice will be served, Amit Shah, Amit Shah National Forensic Sciences University, Amit Shah lays foundation of NSFU, Assam news, Manipur news, India news, Indian Express

মণিপুর হিংসার ঘটনা তিনসপ্তাহ পেরিয়ে যাওয়ার পরও হাসপাতালের মর্গে ভিড় করে রয়েছে দাবিহীন মৃতদেহের সারি। গত ৩রা মে মণিপুরে হিংসার ঘটনার প্রথম খবর মেলে। তারপর থেকে রাজ্য জুড়ে সরকারি সূত্রে মৃতের সংখ্যা ৭৫। তবে মর্গে মৃতদেহের ভিড় উপচে পড়েছে। হাসপাতালের আধিকারিকদের মতে, বেশ কয়েকটি মৃতদেহ শনাক্ত করা হয়েছে তাদের পরিবার বিভিন্ন কারণে সেই দেহের দাবি করছে না। ইম্ফলের জওহরলাল নেহরু ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে, সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে মর্গে পড়ে রয়েছে ১৯টি মৃতদেহ। হাসপাতালের তরফে দাবি করা হয়েছে একটি দেহও পরিবারের তরফে দাবি করা হয়নি। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলেও কেন পরিবারের তরফে দেহ দাবি করা হয়নি তার কোন সদ্যুত্তর মেলেনি হাসপাতালের তরফে।

Advertisment

একইভাবে, ইম্ফল পশ্চিমের আঞ্চলিক ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে অনেক মৃতদেহ দাবি ছাড়াই রয়ে গেছে মর্গে। মৃতদেহের মোট সংখ্যা নিশ্চিত করা না গেলেও, ইম্ফল পশ্চিমের জেলা শাসক কিরণকুমার সিং বলেছেন যে হাসপাতালে ২০টি মৃতদেহ রয়েছে, যার মধ্যে একটি দেহ এখনও পর্যন্ত পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে। সব থেকে খারাপ অবস্থা চুরাচাঁদপুরের জেলা হাসপাতালের, সেখানে মর্গে দাবিহীন দেহের সংখ্যা ২৪। হাসপাতালের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “দুর্গন্ধের কারণে হাসপাতালে টেকা দায় হয়ে যাচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি সুগন্ধি জাতীয় জিনিস জ্বালিয়ে দুর্গন্ধ দূর করার, তবে টেকা দায় হয়ে যাচ্ছে’। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মণিপুর সরকারের একজন মন্ত্রী বলেছেন, ‘পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে রাজ্যসরকারের তরফে দেহগুলি এখনও পর্যন্ত দাহ করা হয়নি’।  

মণিপুর হিংসার ঘটনায় হাইকোর্টের ভূমিকাকে কার্যত একহাত নেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি এক প্রকাশ্য সভায় দাবি করেন, হাইকোর্টের নির্দেশের জেরেই মণিপুরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে! প্রকাশ্য সভায় মণিপুর হিংসা নিয়ে মুখ খুললেন অমিত শাহ। অসমে এক জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘মণিপুরের ঘটনায় সবাই ন্যায়বিচার পাবে’। মণিপুর হাইকোর্ট এক নির্দেশে রাজ্য সরকারকে মেইতি সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতি (এসটি) মর্যাদা দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে একটি সুপারিশ জমা দিতে বলে।

মণিপুর হাইকোর্টের যে রায়কে কেন্দ্র করে অশান্তির সূত্রপাত বলেই দাবি অমিত শাহের, সুপ্রিম কোর্টেও হাইকোর্টের সেই রায় গুরুতর প্রশ্নের মুখে পড়ে। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় হাইকোর্টের রায় ঘিরে বিস্ময় প্রকাশ করেন। কোনও জাতি সম্প্রদায়কে উপজাতি ভুক্ত করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত। বিচারপতি কীভাবে সরকারকে বলতে পারেন কোনও সম্প্রদায়কে সিডিউলড কাস্ট হিসাবে স্বীকৃতি দিতে? এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় হাইকোর্টের আদেশ। সেই একই সুর শোনা গেল অমিত শাহের গলাতেও।

মণিপুরে অশান্তি অব্যাহত। গত কয়েক দিনে একের পর এক হিংসাত্মক ঘটনায় উত্তপ্ত উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যটি। সম্প্রতি ইম্ফলের এক আদালত সাম্প্রদায়িক হিংসা সংক্রান্ত একটি মামলায় প্রাক্তন বিধায়ক হাওকিপকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। তার পরেই আবার নতুন করে সংঘর্ষের খবর আসতে থাকে মণিপুর থেকে। গত কয়েক দিনে বেশ কিছু অঞ্চলে মেইতেই ও কুকি গ্রামে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ, কুকি জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে এক জনের। হামলার অভিযোগ কুকি গ্রাম ও নাগাদের গ্রামেও। মঙ্গলবার রাজ্যের এক মন্ত্রী ও বুধবার কেন্দ্রীয় সরকারের এক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা।

Manipur
Advertisment