দেশের প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার টিএন শেষন প্রয়াত। গত বেশ কয়েক বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি। রবিবার রাত সাড়ে ৯ টা নাগাদ চেন্নাইতে নিজের বাড়িতেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন শেষন। মৃত্যুকালে তাঁর তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
নির্বাচন কমিশনে একাধিক সংস্কার করেছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রাক্তন আএএস অফিসার টি এন শেষনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন। টুইটে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, 'নির্বাচনী সংস্কার টি এন শেষনের সাহসী পদক্ষেপের জন্যই সম্ভব হয়েছে। তাঁর সিদ্ধান্তের জন্যই ভারতের গণতন্ত্র শক্তিশালী ও অংশগ্রহণমুখী হয়েছে।'
১৯৩২ সালে কেরলের পালাক্কর জেলায় জন্ম নেন শেষন। পদার্থবিদ্যা নিয়ে স্নাতক হয়ে মাদ্রাজ খ্রিস্টান কলেজে তিন বছর অধ্যাপনা করেন তিনি। পরে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জন-প্রশাসন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
আরও পড়ুন: মসজিদের জন্য বরাদ্দ জমি গ্রহণ: ২৬ নভেম্বর সিদ্ধান্ত
১৯৫৫ ব্যাচের তামিলনাড়ু ক্যাডারের আইএএস অফিসার ছিলেন সেশন। ১৯৮৯ সালে ক্যাবিনেট সচিবের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। অবসরের পরে ১৯৯০ সালের ১২ ডিসেম্বর থেকে ৯৬ সালের ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন সেশন। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় একাধিক সংস্কার করেছিলেন তিনি। নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করে তোলেন। ভোটার পরিচয়পত্র দিয়ে ভোটদান তাঁর আমলেই চালু হয়। ভোট প্রার্থীদের নির্বাচনী আদর্শ আচরণ-বিধিও তাঁরই অবদান।তাঁর আমলেই দুই অতিরিক্ত নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করেছিল তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার। তবুও থেমে থাকেনি সেশনের নির্বাচন কমিশনে নানা প্রথা সংস্কারের কাজ। কর্তব্যপরায়ণতার জন্য ১৯৯৬ সালে রমন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি।
১৯৯৭ সালে কে আর নারায়ণনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি পদের নির্বাচনে দাঁড়ান তিরুনেল্লাই নারায়ণা শেষন। কিন্তু, পরাজিত হন তিনি। তাঁকে অবশ্য দেশ মনে রাখবে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ করার কারিগর হিসাবেই।
আরও পড়ুন: কাশী-মথুরা নিয়ে এখনই আগ্রাসী হবে না সংঘ পরিবার
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের মৃথ্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। টুইটারে তিনি জানিয়েছে, 'টি এন শেষনের মৃত্যু সম্পর্কে জানতে পেরে দুঃখ পেয়েছি। স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পুরোধা ছিলেন তিনি। গণতন্ত্র রক্ষায় তাঁর অসামান্য অবদান সর্বদা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর পরিবার এবং অনুগামীদের প্রতি রইলো সমবেদনা।'
Read the full story in English