রাজ্য জ্বলছে। তাই সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে মণিপুরের অনেক বাসিন্দাই রাজধানী দিল্লির স্কুলে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করাতে চাইছেন। কিন্তু, সেসব করতে গিয়ে তাঁদের চরম সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। যেমন গ্ল্যাডিস বেইটের কথাই ধরা যাক। ২৭ বছরের এই মণিপুরি গুরগাঁওয়ের এক এনজিওতে কাজ করেন। দিল্লিতে তিনি যখন গ্রীষ্মের ছুটি কাটাচ্ছিলেন, সেই সময় মণিপুরে ব্যাপক হানাহানি শুরু হয়। মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষে ৭০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। অন্ততপক্ষে ২০০ জন আহত। কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত। বেইটে তাঁর ছোট এবং খুড়তুতো ভাইকে কয়েক দিন আগে পর্যন্ত দিল্লির একটি স্কুলে ভর্তি করার চেষ্টা করছিলেন।
বেইটের কথায়, 'আমার ভাইয়ের মত শিশুরা বাড়িতে যে কী করছে, তা এখন নিশ্চিত নয়।' শুধু বেইটে নন। তাঁর মত অসংখ্য মণিপুরির এখন পার্বত্য রাজ্যের শিশুদের নিয়ে নানা আশঙ্কা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। তাঁরা চাইছেন বাড়ির শিশুদের নিরাপদে দিল্লির স্কুলে ভর্তি করাতে। কিন্তু, সেখানেও তৈরি হচ্ছে তীব্র সমস্যা। দিল্লিতে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হয় এপ্রিলে। মে মাসে স্কুলগুলোয় গরমের ছুটি পড়ে। আর, পার্বত্য রাজ্য মণিপুরে কিন্তু শিক্ষাবর্ষ শুরু হয় জানুয়ারিতে। এবার দিল্লির স্কুলগুলো গরমের ছুটি কাটিয়ে খোলার পর মণিপুরের শিশুদের কোন আইন মেনে ভর্তি নেবে? রাজধানীর স্কুলগুলোয় অতিরিক্ত পড়ুয়াদের ভর্তি করার ব্যবস্থা আছে কি না, সেসব নিয়েও অভিভাবকদের মধ্যে রয়েছে ব্যাপক উদ্বেগ।
আরও পড়ুন- অগ্নিগর্ভ মণিপুরে রক্তবন্যা, মেইতেই-কুকি জনজাতির সংঘর্ষে ৯ জন নিহত
সেই উদ্বেগকে স্পষ্ট করে বেইটে বললেন, 'আমার পরিবার সুগনু থেকে এসেছে। গত মাসে হামলার শিকার হওয়া মণিপুরের সর্বশেষ জেলাগুলোর মধ্যে একটি হল সুগনু। হানাহানির আগে, আমার ভাই আমাদের কাকিমার সঙ্গে ছিল। আমাদের বাবা-মা বাড়িতে ছিলেন। হিংসার জেরে আমাদের বাবা-মা একটি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেন। আর, আমার ছুড়তুতো ভাই এবং কাকিমা অন্য ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় পেয়েছিলেন। তারা আইজল হয়ে দিল্লি চলে আসেন। খুড়তুতো ভাইয়ের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। সে এই কারণে দিল্লিতেই থেকে যেতে পারে। দিল্লিতেই লেখাপড়া চালাতে পারে।'