করোনার প্রথম ঢেউ, দ্বিতীয় ঢেউ, লকডাউন এবং বিধানসভা নির্বাচন। এই চারের গেঁড়োয় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যের পর্যটন শিল্প। মধ্যবিত্ত বাঙালির বরাবরের উইকএন্ড ডেস্টিনেশন সৈকত শহর দীঘা। তার সঙ্গে নতুন সংযোজন তাজপুর, মন্দারমণি আর উদয়পুর।
করোনার প্রথম ঢেউ আর দ্বিতীয় ঢেউয়ের মাঝে একটা বড় ব্যবধান ছিল। সেই সময় নানা আমোদে মেতেছিল উৎসবপ্রিয় বাঙালি।আর যেহেতু এই জাতির পায়ের তলায় সর্ষে।তাই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে পর্যটক-বান্ধব গন্তব্য হিসেবে উঠে এসেছিল গত শীতে উঠে এসেছিল পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক সৈকত শহর। সেই ধারা বজায় ছিল মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। কিন্তু তারপর থেকেই বঙ্গ ভোট, ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ গ্রাফ, করোনা বিধিনিষেধ এবং মরার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো ইয়াস বিপর্যয়। এসবের জাঁতাকলে পড়ে পর্যটকশূন্য সৈকত শহরগুলো।
মাছি মারার মতো অবস্থায় হোটেলকর্মীরা। তথৈবচ অবস্থা হোটেল মালিকদের। কিন্তু এ রাজ্যেই নতুন করে আনলকের গন্ধ পেয়ে ফের বুকিংয়ের জন্য ফোন পাওয়া শুরু করেছেন হোটেল মালিকরা। ভরা বর্ষায় কিংবা কোভিড বিধিনিষেধ লাঘব হলেই শয়ে –শয়ে পর্যটক দিঘামুখী হতে চান। এদিন এমনটাই জানিয়েছেন দীঘা হোটেল ওনার্স সমিতি।
ফলে ফের ঘুরে দাঁড়ানোর গন্ধ পেয়ে মুখে সামান্য হাসি হোটেল ব্যসবায়ীদের। নিউ দীঘা সি বিচের কাছে বিলাসবহুল এক হোটেলের ম্যানেজার বলেন, ‘বেশিরভাগ পর্যটক সমুদ্রমুখী ঘর নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। অনেকের আবার লক্ষ্য সি-বিচ থেকে এক কিমি দুরত্বের হোটেলে রাত্রিযাপন।‘
তাঁর মন্তব্য, ‘ইয়াস বিপর্যয়ে যতটা না ক্ষতি হয়েছে দীঘার, তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মন্দারমনি, তাজপুরের। তবে মেরিন ড্রাইভে জল ঢুকে বিপর্যস্ত বালুচরের বাজার। ভেঙেছে বাঁধও।‘ এই বিপর্যয় নিয়ে তরজায় জড়িয়েছে রাজ্যের শাসক ও বিরোধী দল। তাই সেই ক্ষতির পরিমাপ চর্মচক্ষে করতেই দিঘা-মন্দারমনিতে ভিড় বাড়াতে চান পর্যটকরা।
পাশাপাশি বাতিল মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। ঢিমেতালে হলেও অনেকটা আয়ত্বের মধ্যে টিকাকরণ এবং দীর্ঘ একটা সময় গৃহবন্দি দশা। এসব মিলিয়ে ফের পায়ের তলায় সর্ষেকে পিষে নিতে চায় বাঙালিরা।
তাই এখন শুধু নবান্নের কোভিড বিধি লাঘবের ঘোষণার অপেক্ষা। তারপরেই বাঙালির সুপ্রাচীন পর্যটনস্থল দী-পু-দা-র দী-তে ভিড় বাড়াতে মুখিয়ে মধ্যবিত্ত বাঙালি। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে ঘুরিয়ে এই তথ্যই দিলেন এক হোটেল মালিক।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন