রায়বেরিলির রেল দুর্ঘটনার খবর পৌঁছতেই বুধবার সকাল থেকেই মালদা টাউন স্টেশনে উদ্বিগ্ন যাত্রীর পরিজনেরা ভিড় করতে থাকেন। মালদা রেল ডিভিশন সূত্র থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার কবলে পড়া মালদার কোনও যাত্রীর মৃত্যুর খবর নেই। তবে বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হয়েছেন। মানিকচক, হরিশ্চন্দ্রপুর, কালিয়াচকের কয়েকজন যাত্রী ছিলেন ওই ট্রেনে। তাঁদের পরিবারের সদস্যরা খোঁজ করতে ছুটে আসেন স্টেশনের কন্ট্রোল রুমে।
মালদা-দিল্লিগামী আনন্দবিহার এক্সপ্রেসে ছিলেন সাইদুল শেখ (৩৪)। ভাইয়ের কোনও খোঁজ না পেয়ে মালদা টাউন স্টেশেন ছুটে আসেন ইংরেজবাজারের মহাদিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঞ্চনটার বাসিন্দা নিজাম শেখ। উদ্বিগ্ন নিজাম রেলের কন্ট্রোল রুমের কর্তাদের জানান, তিনি তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। তিনি বলেন, “ওই ট্রেনে আমার ভাই সাইদুল শেখ (৩৪) গিয়েছে। দুর্ঘটনার পর থেকে ভাইয়ের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করতে পারিনি।” নিজাম শেখের মত অন্য যাত্রীর আত্মীয়রাও খোঁজ নেন কন্ট্রোল রুমে।
মালদা-দিল্লিগামী আনন্দবিহার এক্সপ্রেস উত্তর প্রদেশের রায় বরেলি এলাকায় দুর্ঘটনার পর বুধবার সকাল থেকে মালদা টাউন স্টেশনে খোলা হয় কন্ট্রোল রুম। স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের অনুসন্ধান অফিসের সামনেই কন্ট্রোল রুমে ছিলেন মালদা ডিভিশনের উচ্চপদস্থ কর্তারা। সেখানে ওই ট্রেনে যাওয়া যাত্রীদের আত্মীয়-পরিজনেরা ভিড় করেন। খোঁজখবর নেন।
আরও পড়ুন: রায়বরেলিতে নিউ ফারাক্কা এক্সপ্রেসের ৯ কামরা লাইনচ্যূত, মৃত কমপক্ষে ৭
এদিন মালদা টাউন স্টেশন ম্যানেজার দিলীপ চৌহান বলেন, “ওই ট্রেনে সফররত যাত্রীদের পরিবারের সুবিধার্থেই এক নম্বর প্লাটফর্মে হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে। যে ট্রেনটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে, সেই ট্রেনটি মঙ্গলবার রাত ন’টা নাগাদ মালদা ছেড়ে যায় দিল্লির উদ্দেশ্যে। বুধবার সকাল ছটা নাগাদ উত্তর প্রদেশে রায় বরেলি স্টেশন থেকে কিছুটা দূরে হরচন্দ্রপুর এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আনন্দবিহার এক্সপ্রেস। মঙ্গলবার এবং শনিবার সপ্তাহে দুদিন এই ট্রেনটি মালদা টাউন স্টেশন থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে ছাড়ে।” তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত মৃতদের তালিকায় মালদার কোন যাত্রীর নাম পাওয়া যায়নি। তবে কয়েকজন যাত্রী জখম হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসা চলছে রায় বরেলি এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে।
মালদা টাউন স্টেশন কন্ট্রোলরুম সূত্রে খবর, দুর্ঘটনায় যাঁরা আহত হয়েছেন তাদের মধ্যে সাতজন রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। মালদার আহত যাত্রীদের মধ্যে সেলিম শেখ (২২) ও নিজাম শেখ (১২) দুজনেরই বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকায়। জখম চাঁদ মন্ডল (৬২)-এর বাড়ি কালিয়াচক থানার মেহেরাপুর এলাকায়। মানিকচক থানার নুরপুর এলাকার বাসিন্দা সরিফুল সেখ (৩২)। পূর্ব রেলের মালদার ডিআরএম তনু চন্দ্রা জানিয়েছেন, এই ট্রেনটি যেসব স্টেশনের ওপর দিয়ে যাতায়াত করে, সেই সব স্টেশনে হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে।