Advertisment

ত্রিপুরার সরকারি স্কুলে বাম জমানার সিলেবাস আমূল বদলের ভাবনা বিপ্লবের

ত্রিপুরা বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশনের স্কুলগুলির সিলেবাসে রদবদল করার কথা ভেবেছে বিজেপি সরকার। বাম জমানার সিলেবাস বদলে ফেলতে চান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
tripura cm, biplab kumar deb

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। ছবি- অভিষেক সাহা, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

লালদুর্গ বলে পরিচিত চেনা ত্রিপুরার চেনা ছবি যে পুরোপুরি বদলে দেওয়া হবে, ভোটপ্রচারে তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তখনকার বিজেপির ভাবী মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। ভোটের ময়দানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ২৫ বছরের বাম জমানাকে দুরমুশ করে কিছুদিন আগে ত্রিপুরায় পদ্মফুল ফুটেছে। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরই ত্রিপুরার ভোলবদলের কথা শোনা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের মুখে। এবার সেরকমই খানিকটা ভোলবদলের আভাস পাওয়া গেল উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্যে। ত্রিপুরায় শিক্ষাঙ্গনের ভোল পাল্টাতে এবার উদ্যোগী হলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। ত্রিপুরা বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশনের আওতায় থাকা স্কুলগুলির সিলেবাস রদবদল করার কথা ভেবেছে বিজেপি সরকার।

Advertisment

গত ২ দশক ধরে ত্রিপুরা বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশনের স্কুলগুলির সিলেবাস জুড়ে রয়েছে মার্কসবাদের ছোঁয়া। পাঠক্রমে ঠাঁই পাননি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীরাও। অথচ, হিটলার, কার্ল মার্ক্সের কথা পড়ানো হচ্ছে পড়ুয়াদের। তাই মানিক সরকারের আমলের এই শিক্ষাব্যবস্থায় এবার ব্যাপক রদবদল আনার কথা ভাবছেন ত্রিপুরার নতুন মুখ্যমন্ত্রী।

সরকারি স্কুলে এনসিইআরটি-র সিলেবাস অন্তর্ভুক্তির কথা ভেবেছে সে রাজ্যের নয়া সরকার। রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলির পাঠ্যক্রমে এনসিইআরটি-র সিলেবাস শীঘ্রই অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। এ ব্যাপারে আলোচনা করার জন্য সরকারের তরফে একটি কমিটিও গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী।

ত্রিপুরায় ৯৫ শতাংশ সাক্ষরতার হার দেশের মধ্যে এখনও সর্বোচ্চ। তা সত্ত্বেও রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায়  যে বিপ্লব কুমার দেব বিশেষ ভাবে জোর দিতে চান, তা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট। সাক্ষরতার হারের থেকেও কত সংখ্যক মানুষ আদপে শিক্ষিত, সেদিকেই জোর দিতে চান বলে জানিয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। অর্থাৎ, পরিমাণ নয়, গুণগত মানেই যে বিশ্বাসী বিপ্লব, তা গতকালই উত্তর-পূর্বে নীতি আয়োগের প্রথম বৈঠকে যোগ দিতে এসে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন বিপ্লব। একইসঙ্গে রাজ্যের সব মানুষের জন্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে যে সমান ভাবে জোর দেওয়া হবে, তাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

মানিক জমানায় রাজ্যের স্কুলের সিলেবাসে মহাত্মা গান্ধীকে বাদ দেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে বিপ্লব বলেন, ‘‘কমিউনিস্টরা ত্রিপুরার মানুষকে শুধু মাও জেদং পড়িয়েছেন, কিন্তু হিন্দু রাজাদের সম্পর্কে পড়াননি। সেজন্যই রাজ্যের স্কুলের পাঠক্রমে এনসিইআরটি-র সিলেবাস অন্তর্ভুক্ত করার কথা ভেবেছি।’’ আগামী দিনে সে রাজ্যের স্কুলের পাঠক্রমে ত্রিপুরার ইতিহাস সম্পর্কেও যে পড়ানো হবে পড়ুয়াদের, সে ব্যাপারেও জানা গেছে।

বিপ্লব কুমার দেবের মতে, নবম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের রুশ এবং ফরাসি বিপ্লব পড়ানো হচ্ছে। ইংল্যান্ডে ক্রিকেটের উত্থান পড়ানো হচ্ছে, হিটলারের জীবনীও পড়ানো হচ্ছে, অথচ রানি লক্ষ্মীবাঈ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সম্পর্কে কোনও কথা পাঠ্যপুস্তকে উল্লেখ নেই বলে জানা গেছে।

আগামী দিনে রাজ্যের ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৩৩৩ জন যুবককে স্কিল ডেভেলপমেন্ট দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রাও তাঁর সরকার নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিপ্লব। একইসঙ্গে প্রায় ৩৭ হাজার কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী।

অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে যেখানে মানিক সরকার বসতেন, সেখানে জাতীয় পতাকাই রাখা ছিল না বলে দাবি করেছেন বিপ্লব কুমার দেব। মুখ্যমন্ত্রীর অফিসের টেবিলে তিনিই প্রথম জাতীয় পতাকা রাখেন বলে জানিয়েছেন বিপ্লব কুমার দেব।

national news tripura
Advertisment