জুলাই মাসের ১৭ তারিখে রাজধানী আগরতলা থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে ত্রিপুরার খোয়াই জেলায় বছর পয়ঁত্রিশের এক আদিবাসী মহিলাকে প্রকাশ্যে মারধর করা হয়। আজ, ঘটনার ২৪ দিন পর, তিনজন অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এই প্রতিবেদককে মুঙ্গিয়াকামি থানার ওসি কিশোর উচই জানান, ঘটনার বিবরণ পুলিশের কাছে আসে এমাসের ৮ তারিখে। জয়মন্তী রিয়াং নামের ওই মিড ডে মিল কর্মী একটি ফেয়ার প্রাইস শপ থেকে ফেরার পথে লোকসমক্ষে আক্রান্ত হন। "ওই মহিলা গুরুতর আহত হন, এবং অগাস্ট মাসের ৮ তারিখ আমাদের থানায় ওই তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। আমরা তিনজনকেই গ্রেফতার করেছি," বলেন ওসি।
ঘটনার পর দিন দুয়েক জয়মন্তীকে হাসপাতালে থাকতে হয়। ছাড়া পেয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান তিনি।
গ্রেফতার তিন ব্যক্তি হলো দশরথ রিয়াং (৫০), লবকুমার রিয়াং (৪৫) এবং চরণিয়া রিয়াং (৪০)। এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, হাজারাপাড়া এলাকায় এরা ওই মহিলাকে নির্যাতন করার। বুধবার অভিযোগ জমা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই দশরথ গ্রেফতার হয়। বাকি দুজনকে আজ গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনাটির একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়, যেটাতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে জয়মন্তীকে ধৃত তিনজন মারছে। মুঙ্গিয়াকামি থানার ওসি অবশ্য বলছেন, এমন কোনো ভিডিও তাঁদের হতে আসেনি, যদিও তিনি এও বলেন যে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, এবং পুলিশ যদি মনে করে, ভিডিওটিকে প্রমাণ হিসেবে গণ্য করা হবে।
ঘটনার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সহ-সভাপতি তাপস দে বলেন ত্রিপুরায় মহিলারা সুরক্ষিত নন। তিনি এও বলেন, যে তাঁর মতে বামফ্রন্ট শাসনের সঙ্গে বিজেপি-আইএফটি জোট শাসনের কোনো গুণগত তফাৎ তিনি দেখতে পাচ্ছেন না।
প্রত্যুত্তরে বিজেপি মুখপাত্র মৃণালকান্তি দেব দাবি করেছেন, গত পাঁচ মাসে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থতির উন্নতি হয়েছে, কারণ বাম আমলে মহিলারা একটা সামান্য এফআইআর দায়ের করতেও সমস্যায় পড়তেন। তিনি আরও বলেন যে পুলিশের দ্রুত সাফল্য রাজ্যে পুলিশের স্বাধীনতার ইঙ্গিত দেয়।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর ২০১০, ২০১১ এবং ২০১২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের নিরিখে ত্রিপুরা প্রথম সারির রাজ্যগুলির মধ্যে একটি। এবং অপরাধ সাব্যস্ত হওয়ার হার ২৪.৭ শতাংশ।