প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার জমানায় চালু করা হয়েছিল H-4 ভিসা, যা দেওয়া হত H-1B ভিসাধারীদের স্বামী বা স্ত্রীকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাঁরা ছিলেন ভারতীয়। এবার ট্রাম্প প্রশাসনের H-4 ভিসা বাতিল করার সিদ্ধান্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী হাজার হাজার ভারতীয়র ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। H-1B ভিসা যাঁরা পেয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই উচ্চশিক্ষিত চাকুরিজীবী। ওবামা প্রশাসনের ২০১৫ সালে জারি করা একটি বিশেষ নির্দেশের অধীনে H-4 ভিসাধারীদের ওয়ার্ক পারমিট দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: প্রথম পাগড়িধারি হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা বাহিনীতে পাঞ্জাবের যুবক
এই বিশেষ নির্দেশ বাতিল হয়ে গেলে এর প্রভাব পড়বে প্রায় ৭০,০০০ ভারতীয়র ওপর, যাঁদের ওয়ার্ক পারমিট রয়েছে। আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বুধবারে প্রকাশিত তাদের Unified Fall Agenda-তে জানিয়েছে, বর্তমানে যে H-4 ভিসা হোল্ডারদের আমেরিকায় কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়, তা বন্ধ করে দিলে কিছু মার্কিন চাকরিপ্রার্থীর সুবিধে হবে। ডিপার্টমেন্ট আরও বলেছে, নতুন নিয়ম অনুযায়ী, H-4 ভিসা থাকলেও কাজের বাজারে ঢোকা সহজ হবে না।
উল্লেখ্য, ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইতিমধ্যেই এবছরে তিনবার এই নতুন নিয়মাবলী ঘোষণার সময়সীমা পিছিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এবার তারা জানিয়েছে যে তারা H-4 ভিসা হোল্ডারদের কাজের অনুমতি পাওয়ার প্রক্রিয়া রদ করার পথে।
Unified Fall Agenda-তে বলা হয়েছে, "কিছু মার্কিন নাগরিকের এই নতুন নিয়মের ফলে সহজে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ H-4 ভিসা হোল্ডাররা বেশ কিছু পদ অধিকার করে রয়েছেন। প্রস্তাবিত নতুন নিয়ম অনুসারে H-4 কর্মীরা আর আগেভাগে কাজের বাজারে ঢুকতে পারবেন না।"
আরও পড়ুন: দেশের পতাকায় ভুল রঙ দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প!
২৫ ডিসেম্বর, ২০১৭-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মার্কিন নাগরিকত্ব এবং অভিবাসন সার্ভিস H-4 ভিসা হোল্ডারদের তরফ থেকে মোট ১২৬,৮৫৩ টি কাজ করার অনুমতির আবেদন মঞ্জুর করে। এর মধ্যে রয়েছে মে ২০১৫ থেকে মঞ্জুর হওয়া সমস্ত আবেদন। মোট সংখ্যার মধ্যে রয়েছে ৯০,৯৪৬ টি প্রাথমিক মঞ্জুরি, ৩৫,২১৯ টি নবীকরন, এবং ৬৮৮ টি খোয়া যাওয়া কার্ডের প্রতিস্থাপন।
গত মাসে দুজন প্রভাবশালী মহিলা ডেমোক্র্যাটিক সেনেটর, কমলা হ্যারিস এবং কার্স্টেন গিলিব্রান্ড, ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে আবেদন জানান যাতে H-4 ভিসার দরুন কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রত্যাহার না করা হয়, কারণ এতে অসুবিধের সন্মুখীন হবেন প্রায় এক লক্ষ মহিলা। "মহিলাদের কর্মসংস্থান না করলে তাঁরা ক্রমশ একা হয়ে পড়বেন, এবং মানসিক অবসাদ, আশঙ্কা, ও অপরাধবোধে ভুগবেন। একজন স্ত্রী যদি রোজগার না করেন, তিনি এবং তাঁর সন্তানরা সম্পূর্ণভাবে তাঁর স্বামীর ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হন। ক্রমবর্ধমান একাকীত্ব, তৎসহ সম্পূর্ণ আর্থিক নির্ভরতা, সম্পর্ক ত্যাগ করার পথে বড় অন্তরায়, তা সে সম্পর্ক যতই অবমাননাকর হোক।"
কিন্তু Unified Fall Agenda প্রকাশের পর এ নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই, যে ট্রাম্প প্রশাসন পূর্ববর্তী ওবামা প্রশাসনের বিশেষ নির্দেশ বাতিল করতে বদ্ধপরিকর।