শবরীমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকারের দাবিতে এবার আসরে নামলেন সমাজকর্মী তৃপ্তি দেশাই। শুক্রবার শবরীমালা মন্দিরে পা রাখতে চলেছেন তৃপ্তি। যা নিয়ে শবরীমালা বিক্ষোভের আঁচ বাড়বে বৈকি কমবে না। আগামিকাল থেকেই মন্ডলম পুজার জন্য মন্দির খুলছে। আর সেদিনই মন্দির দর্শনে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃপ্তি। তাঁর মন্দির দর্শনে বিক্ষোভের আঁচ বাড়তে পারে এই আশঙ্কায় কেরালার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও লিখেছেন তিনি। এমনকি কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃপ্তি। মন্দির দর্শন করতে গিয়ে তৃপ্তি ও তাঁর সঙ্গীদের উপর হামলা হলে, তার জন্য দায়ী থাকবেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও ডিজিপি, এমন হুঁশিয়ারিই দিয়েছেন তৃপ্তি।
এ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস.কম-কে তৃপ্তি বলেছেন, ‘‘ভিআইপি নিরাপত্তা কখনই চাইনি। আমি ইতিমধ্যেই নানা হুমকি পাচ্ছি যে, সে রাজ্যে পা রাখলে আমায় টুকরো টুকরো করা হবে। সব দিক ভেবেই আমি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলাম। আমি একশো শতাংশ নিশ্চিত যে, আমাদের উপর হামলা চালানো হবে। আমরা প্রাণও হারাতে পারি। ফলে, এরকম যদি কিছু হয়, তবে তার জন্য দায়ী থাকবেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী ও ডিজিপি।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘আমি না ভাষা বুঝতে পারি, না জায়গাটা চিনি। ফলে আমাদের নিরাপত্তা দেওয়াটা পুলিশের দায়িত্ব।’’
মহারাষ্ট্রের শনি মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকার নিয়ে তৃপ্তির লড়াই গোটা দেশ দেখেছে। সেই তৃপ্তিই এবার শবরীমালা মন্দিরে পা রাখতে চলেছেন। সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ের জেরে শবরীমালা ইস্যুতে যেভাবে এমনিতেই তপ্ত কেরালা, সেখানে তাঁর মন্দির দর্শনে যে উত্তেজনার পারদ আরও বাড়বে তা বলাই বাহুল্য। আর সেকারণেই পুলিশি নিরাপত্তা চেয়েছেন তৃপ্তি। তিনি আশা করছেন যে, শুক্রবার শবরীমালা মন্দির যাওয়ার জন্য কেরালা সরকার তাঁকে ও তাঁর সঙ্গে থাকা আরও ৬ জন মহিলার জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবেন।
আরও পড়ুন, শবরীমালা নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকলেন বিজয়ন, আলোচনায় থাকছে কংগ্রেস-বিজেপি
শবরীমালা মন্দিরে যাওয়ার আগে প্রাণের ভয় রয়েছে? জবাবে তৃপ্তি জানিয়েছেন, ‘‘না, কারণ, এই লড়াইটা সমানাধিকারের জন্য। আমি একজন সমাজকর্মী, কিন্তু আমি একজন ভক্তও। আমি শনি শিংনাপুর আন্দোলের নেতৃত্ব দিয়েছিলাম কারণ আমি ভক্ত বলে। যদি ভগবান ভক্তদের মধ্যে বিভাজন না করেন, তবে আমরা করার কে?’’
শুক্রবার কেরালা সফরের জন্য যাবতীয় খরচ তিনি নিজেই বহন করবেন বলে জানিয়েছেন তৃপ্তি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা ইতিমধ্যেই শুক্রবার ফ্লাইট বুক করেছি। সরকারের কাছে শুধু একটাই আর্জি যে, বিমানবন্দরে আমাদের জন্য একটা গাড়ির ব্যবস্থা করা হোক। সেইসঙ্গে কোট্টায়াম অথবা পাথানামথিট্টায় গেস্ট হাউসের ব্যবস্থা। আমরা চাই ওঁরা আমাদের ঘর বুক করে দিক, আমরা সব টাকা দিয়ে দেব।’’
এদিকে, কাল মন্দির খোলার আগে বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। সর্বদল বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা কংগ্রেস ও বিজেপিরও।
Read the full story in English