সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদ এবং জম্মু-কাশ্মীরকে পৃথক দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করার পাঁচ মাস পর, বৃহস্পতিবার ১৫টি দেশের রাষ্ট্রদূতের দল পৌঁছল শ্রীনগরে। উপত্যকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতেই দু'দিনের এই সফর রাষ্ট্রদূতদের। সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে বৃহস্পতিবার দুপুরেই শ্রীনগরের টেকনিকাল এয়ারপোর্টে পৌঁছেছেন আমেরিকার অ্যাম্বাসেডর কেনেথ ইয়ান জাস্টার সহ- ১৫টি দেশের প্রতিনিধিরা। সেখানে তাঁদের স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকেরা।
জানা গিয়েছে, নয়া কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের রাজধানী জম্মুতে রাত্রিবাস করার কথা রাষ্ট্রদূতদের। পরবর্তীতে তাঁরা লেফটেন্যান্ট গভর্নর জি সি মুর্মুর পাশাপাশি নাগরিক সমাজের সদস্যদের সঙ্গেও দেখা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই প্রতিনিধি দলে নেই কোনও ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের দেশ।
সরকারি সূত্রের খবর কোনও প্রতিনিধি নয়, দল নিয়ে সেখানে যেতে চায় ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন। কিন্তু কিছু বিধিনিষেধ থাকায় সেই পরিকল্পনা মেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না কেন্দ্রের পক্ষে। সূত্র বলেন, "আমরা জম্মু কাশ্মীরের পরিস্থিতি পরিদর্শন করার জন্য একটি গ্লোবাল গ্রুপ এবং কয়েকজন ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন অ্যাম্বাসেডরদের নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। সব ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন প্রতিনিধিদের এই সফরে বলা হয়নি।" সূত্র এও জানায় যে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে জানান হয় যে খুব সংক্ষিপ্ত নোটিস দেওয়া হয়েছিল সদর দফতর থেকে। তাই ইউরোপীয় ইউনিয়ন দলকে পরবর্তীতে জম্মু-কাশ্মীর পরিদর্শনে নিয়ে যাওয়া হবে।
আরও পড়ুন: জেএনইউ হামলায় চিহ্নিত কয়েকজন মুখোশধারী
প্রসঙ্গত, জম্মু-কাশ্মীরে আটক তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরা। সেই প্রসঙ্গে জানান হয় যে রাষ্ট্রদূতদের সুরক্ষার দিকটি ছাড়া সেখানকার মানুষের সঙ্গে কথা বলার ক্ষেত্রে তাঁদের কোনও রকম বিধিনিষেধ নেই। তবে কোনওভাবেই আটক ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না রাষ্ট্রদূতেরা।" তবে সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতরা। সূত্রের খবর কর্মসূচির কিছু বিধিনিষেধের কারণে জম্মু কাশ্মীর পরিদর্শনকারী এই দলের অংশ নিচ্ছেন না তাঁরা।
কূটনীতিকের অবশ্য বক্তব্য, উপত্যকা পরিদর্শনের ক্ষেত্রে এত বিধিনিষেধ মানতে নারাজ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। যদিও এই সফরের যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সরকারি সূত্র জানায় যে তারা দিল্লিতে অবস্থিত কয়েকজন রাষ্ট্রদূতদের থেকে অনুরোধ পেয়ে এই পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হয় কেন্দ্রের তরফে। সূত্র জানায়, “আমরা নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে এবং জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলার পরই এই অনুরোধটি বিবেচনা করি। উপত্যকাকে স্বাভাবিক করতে সরকারের যে প্রয়াস তা দেখানোর জন্যই দিল্লিতে অবস্থিত ১৫ জন রাষ্ট্রদূতের একটি দলকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।"
আরও পড়ুন: সন্ত্রাসবাদে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে বিশ্বাসী ভারত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সদস্যদের বার্তা মোদীর
উল্লেখ্য, জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বা ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার এবং রাজ্যটিকে ভেঙে দুটি ভাগে বিভক্ত করার তিনমাস পর গত অক্টোবরে সেখানে দু'দিনের সফরে যান ইউরোপিয় ইউনিয়নের ২৫ জন সাংসদ। পররাষ্ট্রমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেন, "সেই সময় জম্মু কাশ্মীরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গভীর ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল ইউরোপিয় সাংসদের দলটি। সন্ত্রাসবাদ কীভাবে ভারত ও কাশ্মীরকে প্রভাবিত করেছে সে বিষয়ে পরিস্থিতি দেখতেই জম্মু কাশ্মীরে যান ওই প্রতিনিধি দল।
Read the full story in English